কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় লাকসাম রেলওয়ে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলার পরপরই এই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে ৪ মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে লাকসাম রেলওয়ে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত চার জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সবাই চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তেলিগ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রাসাপড়ুয়া ছাত্র। গত ১৮ মার্চ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ–সহকারী প্রকৌশলী (পথ) রিটন চাকমা বাদী হয়ে লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলাটি করেন। গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ উল্লাহ বাহার।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে আসলে কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় রেলওয়ে আলাদা তদন্ত কমিটির মাধ্যমে কারণ অনুসন্ধান করছে বলে জানান তিনি।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি মুরাদ উল্লাহ বাহার বলেন, গত সোমবার রাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চার জনকে আসামি করে লাকসাম থানায়
একটি মামলা করে। ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনায় অভিযান চালিয়ে তেলিগ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনার আগে কয়েকজন কিশোর রেললাইনের ওপর ঘোরাঘুরি করতে থাকলে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দিলে একটি স্কুলব্যাগ ফেলে তারা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। পরে ফেলে রাখা স্কুলব্যাগ তল্লাশি করে ভেতর থেকে রেললাইনের ৩টি বিয়ারিং পাওয়া যায়। পরে জন্মনিবন্ধনের সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জানান, রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে এমন ধারণা থেকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে রেলওয়ে মামলাটি করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ আনুমানিক দুপুর পৌনে ২ টায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর তেজের বাজার এলাকায় লাইনচ্যুত হয় জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেসের নয়টি বগি। দুর্ঘটনার পর ১৫ ঘণ্টা চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। একটি লাইন মেরামতের পর রেল চলাচল শুরু হলেও এখনও ট্রেনের বগিগুলো উদ্ধার কাজ চলছে।