বিরোধী আসনে কে বসবে, সিদ্ধান্ত নতুন প্রধানমন্ত্রীর : কাদের

১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীতে আ. লীগের সমাবেশ

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দলের আসনে কারা বসছে, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল সোমবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

রোববার ২৯৯ আসনে অনুষ্ঠিত ভোটে ২২২টি আসন পেয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করার পথে রয়েছে আওয়ামী লীগ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তারা জিতেছেন মোট ৬২ আসনে। আর গত দুই সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসা জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১ আসন। এর বাইরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একসময় বিএনপির জোটে থাকা কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। ময়মনসিংহ(গৌরীপুর) আসনের ফল স্থগিত রাখা হয়েছে। সেই আসনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এগিয়ে আছেন। খবর বিডিনিউজের।

লাঙ্গলে প্রতীকে জয়ী ১১টি আসন নিয়ে দৃশ্যত আবারও সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। তবে সংখ্যায় স্বতন্ত্ররা পাঁচগুণ বেশি হওয়ায় জাতীয় পার্টির বিরোধী দলের আসনে বসাটা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

সংসদে বিরোধী দল কে হবেসাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, লিডার অব দ্য হাউস অর্থাৎ যিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিএনপির ভোট বর্জনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের এখন আগামী ৫ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু করার নেই।

উৎসবমুখর, অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বিচারে মানব হত্যা, বাংলাদেশ বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ রায় দিয়েছে। উন্নয়নের নেত্রী শেখ হাসিনা জনতার এই বিশাল রায়ের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। তিনি এ রায়ের প্রতিদান নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতিকে অব্যশই উপহার দিবেন।

কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্বার প্রমাণ করেছেন একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কার্যকর থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব। এই দেশের সংবিধান অনুযায়ী একটি নির্বাচিত সরকার আরেকটি নির্বাচিত সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। আমরা সেইভাবেই নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছি।

দেশেবিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, গণমাধ্যমসহ বিদেশি সাংবাদিকপর্যবেক্ষক সবাই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে জানান কাদের। বিএনপি নেতা মইন খানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড তারেক জিয়া। এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী দুর্নীতি ও টাকা পাচারের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং পালিয়ে আছে বিদেশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক গোপন তারবার্তায় তারেক জিয়াকে বাংলাদেশের সহিংসতার রাজনীতির গডফাদার হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। এ ধরনের একজন অপরাধীর আজ্ঞাবহ কর্মী হয়ে নিজেদের বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে ড. মইন খানের মতো বিদ্বান ব্যক্তিরা যখন প্রতিদিন লজ্জাষ্কারভাবে মিথ্যাচার করে যায়, ফরমায়েশি বক্তব্য দেয়, তা দেখে একজন রাজনীতির মানুষ হিসেবে আমার নিজেরই লজ্জা লাগে।

বিজয়ী এবং পরাজিত প্রার্থীদের সহিংসতা ও উসকানি পরিহার করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধ জানান কাদের।

১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর ঢাকায় প্রথম সমাবেশে করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটানা চতুর্থবার আওয়ামী লীগ
পরবর্তী নিবন্ধকে এই চৌধুরী সাহেব