বিয়ের জন্য চাপ, প্রেমিকাকে গলা টিপে হত্যা

বস্তাবন্দি নারীর লাশের রহস্য উন্মোচন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৫ মার্চ, ২০২৫ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর লালখান বাজার এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচ থেকে বস্তাবন্দি নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নয়ন বড়ুয়া (২৯) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রবিবার বিকেল ৫টার দিকে চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জানায়, ভিকটিমের নাম জ্যোৎস্না বেগম। তিনি একজন পোশাক শ্রমিক। বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে নয়ন তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং লাশ গুম করতে কম্বল পেঁচিয়ে বস্তাবন্দী করে ফেলে দেয়। এর আগে শনিবার বিকেলে মরদেহটি উদ্ধার করে খুলশী থানা পুলিশ।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার নয়ন বড়ুয়া রাউজান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গহিরা এলাকার জয় কুমার বাড়ির মৃত মিলন বড়ুয়ার ছেলে। তার স্ত্রী ছেলেদের নিয়ে রাউজানে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। অন্যদিকে, ভিকটিম জোৎস্না বেগমও একই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। কর্মস্থলে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর জানান, ভিকটিমের নাম জোৎস্না বেগম। তিনি একজন পোশাক শ্রমিক। এ ঘটনায় নগরের খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার বড় বোন তৈয়বা বেগম।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম জোৎস্না বেগম ও আসামি নয়ন বড়ুয়া দুজনেই চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার মাথায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। কর্মস্থলে পরিচয় সূত্রে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যান। পরে তারা ফেব্রুয়ারি মাসে নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার আয়েশা মায়ের গলির কামাল ম্যানসনের নিচতলায় স্বামীস্ত্রী পরিচয়ে এক কক্ষের বাসা ভাড়া নেন।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, জ্যোৎস্নার আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল। নয়নের সঙ্গে সম্পর্কের পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি স্বামীকে তালাক দেন। এরপর নয়নকে স্বামী হিসেবে পেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।

এজন্য তাকে বিয়ে করার জন্য নয়ন বড়ুয়াকে চাপ দিতে থাকেন।

নয়ন বড়ুয়ার গ্রামে আগের স্ত্রীসন্তান থাকায় জোৎস্না বেগমকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় নয়ন। তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, সমপ্রতি জ্যোৎস্না রাউজান উপজেলার পশ্চিম গহিরার নয়নের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবরও নেন। যদিও ওইসময় নয়নের সঙ্গে প্রেমে সম্পর্কের বিষয়টি ফাঁস করেননি তিনি। এরপর একাধিকবার সবকিছু ফাঁস করে দেওয়া ও মামলার হুমকি দিতে থাকলে এটি নিয়ে বিরোধ এবং বাকবিতন্ডা হয়। তার জেরে নয়ন গত শনিবার ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে উত্তেজিত হয়ে গলাটিপে হত্যা করে জ্যোৎস্নাকে।

হত্যার পর আসামি নয়ন বড়ুয়া জোৎস্না বেগমের মরদেহটি কম্বল পেচিয়ে দড়ি ও ওড়না দিয়ে বেঁধে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রিকশা ও অটোরিকশা যোগে লালখানবাজার এনে এঙপ্রেসওয়ের নিচে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভিটেবাড়ি রক্ষা করার আকুতি আইআইইউসির এক ছাত্রীর
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক মমিনুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদকের অনুমোদন