দেশের ‘ভাবমূর্তির’ কথা বিবেচনায় নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যাত্রীসেবার মান বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন ড্যাশ ৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ ‘আকাশতরী’ ও ‘শ্বেত বলাকা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের দেশ। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি। এদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব, সকলেরই কর্তব্য। দেশটা যত উন্নত হবে অর্থনৈতিকভাবে আমরা যত স্বাবলম্বী হতে পারব বা আমরা আমাদের যাত্রীসেবা যত উন্নত করতে পারব, ততই দেশের লাভ হবে, দেশের মানুষের লাভ হবে এবং আমাদের দেশটাও আরো উন্নত হবে। সেদিকে সবাই লক্ষ্য রেখেই আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন। সেটাই আমি চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, এ পর্যন্ত জনগণের টাকায় ১৬টি নিজস্ব নতুন আধুনিক উড়োজাহাজ ক্রয় করা হয়েছে এবং সর্বমোট এখন আমাদের ২১টি জাহাজ আছে। সেগুলো যেন সুন্দরভাবে সুরক্ষিত থাকে এবং যাত্রী সেবার যেন মান উন্নত হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য আপনাদের কাছে আমার আহ্বান থাকল।
বিমান শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেজন্য সব সময় আমাদের প্রচেষ্টা ছিল যে এই বিমান যেন ভালোভাবে, সুন্দরভাবে আমরা গড়তে পারি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে ‘প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থাৎ আমাদের যে ভৌগলিক অবস্থানটা আছে এবং আমরা ইন্টারন্যাশনাল এয়াররুটের ভেতরে আছি। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিন্তু প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের একটা সেতুবন্ধন রচনা করতে পারে। তাছাড়া আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি, যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি করা, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ আমাদের রয়েছে। সেই সুযোগগুলো কাজে লাগানো, এটাও জাতির পিতার একটা আকাক্সক্ষা ছিল।
বিমানের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই যে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে আসার পর রাজশাহী বিমানবন্দর, বরিশাল বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর সবাই প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর আবার সেগুলো চালু করি। পাশপাশি কক্সবাজার বিমানবন্দরকে উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল এয়াররুটে এই বিমানবন্দরটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
বর্তমানে বিমান বহরে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ আছে।