বিভিন্ন এনজিওর ১২৫০ জন স্থানীয় শিক্ষক চাকরিচ্যুত

উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আল্টিমেটাম

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ১ জুন, ২০২৫ at ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন এনজিওতে কর্মরত ১ হাজার ২৫০ জন শিক্ষককে কোনো ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ একযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন তারা। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সারা দিন উখিয়া শহীদ মিনার চত্বরে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে ও পুনরায় চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। বিক্ষোভকারী শিক্ষকরা জানান, ব্র্যাক, কোডেক, ফ্রেন্ডশিপ, মুক্তি, কোস্ট ফাউন্ডেশন ও জেসিএফসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য পরিচালিত স্কুলগুলোতে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা উভয় সম্প্রদায়ের শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল। তবে তারা বলছেন, হঠাৎ করে অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে শুধু স্থানীয় ১ হাজার ২৫০ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়, যেখানে রোহিঙ্গা শিক্ষকরা বহাল আছেন। অভিযোগ রয়েছে, আরো প্রায় ৩ হাজার শিক্ষককে ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকরি পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যথায় আজ রোববার থেকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ পরিচালনাকারী কোনো এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বলেন, রোহিঙ্গা শিক্ষকরা যদি কাজ করতে পারেন তাহলে আমরা কেন পারব না? অথচ শুধু আমাদেরই চাকরিচ্যুত করা হলো। এ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না।

উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, তহবিল সংকট থাকলে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যৌক্তিক নয়। বরং শিক্ষা প্রকল্পই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ইউনিসেফের অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এনজিও ক্যাম্পে শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্পটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়টি ইউনিসেফ চিঠিযোগে সরকারকে অবহিত করেছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চালানোর অর্থ তাদের রয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে কিছু সংখ্যক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর প্রতিবাদে যারা আন্দোলন করছেন তারা ইতোমধ্যে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদেরকে বিষয়টি বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় পুকুর পাড়ে মিলল ব্যবসায়ীর লাশ, আটক ২
পরবর্তী নিবন্ধতলিয়ে গেল মীরসরাই উপকূলের বেড়িবাঁধ