সভ্যতার এই যুগে আদি যুগের লীলা খেলায় আমরা নিমগ্ন। গলা ফাটিয়ে আত্ম চিৎকার করে বলি মানবাধিকার, সভ্য সমাজ, মানবতার কথা। আদৌ কি আমরা এই সব কথার বিশ্বাসী, যদি তাই হতো, প্রতিনিয়ত আমাদের সভ্য সমাজকে অসভ্য মানুষের নগ্ন আঘাতে জর্জরিত হত। গ্রাম কি শহর– শিক্ষিত কি অশিক্ষিত একই দাঁড়িপাল্লায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, আমাদের প্রচলিত ধ্যান ধারণ আমরা নির্লজ্জিত, মানবতা এখানে নির্বাক। এসব কথার পিছনের উক্তিটা হচ্ছে আমরা কি আদৌ সভ্য সমাজের মানুষ। যদি হয়ে থাকতাম প্রতিনিয়ত চল্লিশ মিনিট অন্তর অন্তর একটা তালাকনামা সংঘটিত হতো না। এখানে মানবতা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রতিনিয়ত করতে যাচ্ছে যৌতুক আর তালাকনামা হেডলাইন, এখানে সবচাইতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে নারী, সর্বক্ষেত্রে যাচ্ছেন নারীর পক্ষে আইন, এখানে পুরুষ আইনের কাছে নিরুপায়। আমাদের এই সভ্যসমাজ নারীর নিরাপত্তার পুরুষকে আইনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। সহজভাবে বলতে গেলে একটি সাধারণ বিয়ে তো ২৫/৩০ লক্ষ টাকা কাবিন ধরা হয়, যা একজন যুবকের পক্ষে আয়ের সাথে উপযুক্ত নয়, যা আজ আমাদের বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে। পক্ষান্তরে দেখা যাচ্ছে পান থেকে চুল খসলে নারী আদালতে আশ্রয় নেয়, মামলা ঠুকিয়ে দেয় নারী নির্যাতন যৌতুক, কাবিনের টাকা উদ্ধার। এখানে পুরুষ নির্বাক, এখানে আইন তাকে কোনোরূপ সহযোগিতা করার কোনো সুযোগই নেই, জেল খাটো, কাবিনের টাকা পরিশোধ করো, এখানে আইন নীরব, নারী ও আইনের কাছে সম্পূর্ণরূপে একজন পুরুষ প্রতারিত। এইরূপ কালচার আমাদের সমাজে প্রচলিত হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত তালাকের কথা শোনা যাচ্ছে, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে সারা বাংলাদেশে ৪০ মিনিট অন্তর বিবাহ বিচ্ছেদ করতেছে, তার অন্তরায় হচ্ছে বড় অংকের কাবিননামা, যা আইনগত পরিশোধ করতে বাধ্য পুরুষ, এখানে পুরুষের পক্ষে আইন কোন রূপ সহযোগিতা দিচ্ছে না। এই করুণ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, রাষ্ট্রীয় আইনের সংশোধনীয় আনতে হবে। দুই পক্ষের সমান অধিকার পেতে হবে। প্রচলিত আইনের সংশোধনীয় একান্ত প্রয়োজন। সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ হলে কমে আসতো ডিভোর্স হওয়ার প্রবণতা, পাশাপাশি ধর্মীয় বিধি–বিধান এবং সমাজের নেতৃত্ব স্থানীয় সক্রিয়তা থাকলে এ কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা যায়, এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে বিবাহটা পড়াচ্ছেন যে মাওলানা সাহেব, বরের আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাবিনের টাকা কত হতে পারে এটা উল্লেখ করতে পারেন। বিবাহ বিচ্ছেদ কমাতে রাষ্ট্রীয় আইনের সমুন্নত করতে হবে, ধর্মীয় এবং সামাজিক ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের অপব্যবহার তুলে ধরতে হবে, বিবাহবিচ্ছেদ এখন আমাদের সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে রূপান্তর হয়েছে, এ সমস্যার পরিত্রাণ পেতে আইনের প্রয়োগ পরিবর্তন করতে হবে, সামাজিক এই অবক্ষয় থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি।