বির্বতনের ধারায় সব কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। আগের মত পালকি বেয়ারাও নেই। হাঁকাই না গরুর বা মহিষের গাড়ি দিয়ে মালপত্র। নেই কোনও গাড়িয়াল ভাই। সুর তোলে না ভাওয়াইয়া গান। বাড়ি বাড়ি মেয়েরা কোমর বেঁধে ধান মারায় না। তখনকার দিনে ঘরে নতুন ধান আসলে পিঠার খাওয়ার ধুম পড়ে যেত। তখন মেয়েরা শাড়ি, নাকের নোলক, কোমরে বিছা, মাথায় লাল ফিতা দুই বিনুনী পরে সাজত। হয় না জ্যোৎস্না রাতে উঠানে হাডুডু, লুকুচুরি খেলা, পালা গান, পুঁথি পাঠ, যাত্রা, সার্কাস বা পুতুল নাচ। হয় না ঠাকুরমা থেকে ভূতের গল্প শুনা। ঢেঁকি, ডালা, কুলায় চাল ঝারা উঠে গেছে। আগের মত মাঠে চড়ে না গরু, মহিষ, ছাগল। বর্ষায় মাঠে পানি হলে মাছ ধরার ধুম পড়ে যেত। মাঝি ডিঙা নিয়ে নদী অতিক্রম কালে সুরের মুর্ছনায় আনন্দ বেদনাগুলো বিমূর্ত হয়ে ফুটে উঠতো সেই গানের সুরে। বাবা দাদুরা হাট থেকে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতে ফিরতে গুন গুন করে হিসাব কষতো নিবিড় ভাবে। আর আগামী দিনের স্বপ্ন নিয়ে কত ভাবনাই করতো। আগেকার মানুষের মধ্যে তেমন হিংসা বিদ্বেষ বা অহংকার ছিল না খুবই সহজ সরল মনের মানুষ ছিল। একে অন্যের প্রতি আন্তরিকতার অভাব ছিল না। দিন পরিবর্তনে ফলে শহরে মানসিকতা আর নাগরিক সংস্কৃতি ও আকাশ সংস্কৃতির আধিপত্য কম্পিউটার মোবাইল যুগের কারণে এই দৈন্যদশা। সব কিছুতেই আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় অতীতের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি হারিয়েছে কালো মেঘের ছায়াতে। এখন দেখি নবান্ন উৎসব গ্রাম ছেড়ে শহরে আধুনিক আলোকায়নে শোভা পাচ্ছে। সব কিছুর পরিবর্তনের সাথে সাথে ঋতুর ও পরিবর্তন হয়ে গেছে।