মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানসহ ১২ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে এই নোটিশ
আজাদী প্রতিবেদন
নগরের বিপ্লব উদ্যানে চলমান নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র, সিডিএ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, সিএমপি কমিশনার এবং তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১২ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে নোটিশ দিয়েছে উদ্যানটিতে বিদ্যমান দোকানের ১২ মালিক। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপ্লব উদ্যান চত্বরে সমস্ত নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বলা হয়। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
নোটিশদাতা দোকান মালিকরা জানিয়েছেন, গত সোমবার ডাকযোগে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়েছে। তাই আজ রোববার পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ১২ নোটিশ প্রদানকারী হচ্ছেন মাহমুদুল হাসান, মো. এহতেশামুল হক, হুমায়ুন কবির, মো. ইমরান হোসাইন, মো. আলমগীর হোসেন, মোছাম্মৎ মমতাজ বেগম সুমি, মো. আবদুর রহিম, মো. মোস্তফা কামাল, রশীদ আহমদ, নাজমীন সুলতানা, তুহিন বড়ুয়া ও মো. ইকবাল হোসেন। নোটিশটি পাঠানো হয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সিডিএ চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিফর্ম কনসোর্টিয়া লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার ও স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্ট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কাছে।
নোটিশে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর চসিকের সাথে রিফর্ম কনসোর্টিয়া লিমিটেড ও স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্টের সঙ্গে বিপ্লব উদ্যানে সৌন্দর্যবর্ধনে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটি ১৫০ বর্গফুটের ২৫টি দোকান নির্মাণ করে। নোটিশদাতারা এসব দোকান ইজারা নেন। পরে ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট চসিক রিফর্ম কনসোর্টিয়া লিমেটেডের সাথে আরেকটি চুক্তি করে। এ চুক্তিতে ‘বেআইনিভাবে’ ২০১৮ সালের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প সংশোধনের অনুমতি দেয়া হয়েছে রিফর্ম কনসোর্টিয়া লিমেটেডকে।
নোটিশে বলা হয়, ২০২৩ সালের চুক্তির পর রিফর্ম কনসোর্টিয়া লিমিটেড বিপ্লব উদ্যানের সৌন্দর্যায়নের মূল পরিকল্পনায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। একইসঙ্গে বিপ্লব উদ্যানে আরও দোকান নির্মাণ শুরু করে, যা বিপ্লব উদ্যানের প্রকৃতি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এ বিষয়ে বিদ্যমান দোকান মালিকরা বিপ্লব উদ্যানে নতুন করে কোনো বাণিজ্যিক কাঠামো নির্মাণ না করার জন্য চসিক মেয়র ও প্রধান নির্বাহীকে অনুরোধ করলেও তা আমলে নেননি। এছাড়া নগরবাসী ও পরিবেশকর্মীরা বারবার মিছিল–সমাবেশ, মানববন্ধন করেছে। এরপরও বিপ্লব উদ্যানের অভ্যন্তরে অবৈধ বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করে বিপ্লব উদ্যান দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির আজাদীকে বলেন, ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়েছে। এরপরও বিপ্লব উদ্যানে বাণিজ্যিক কাঠামো নির্মাণ বন্ধ হয়নি। তাই আমরা আগামীকাল রোববার (আজ) উচ্চ আদালতের মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
নোটিশদাতার আইনজীবী মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল আজাদীকে বলেন, ২০১৮ সালে তৎকালীন মেয়র বিপ্লব উদ্যানে একটি প্ল্যান অনুমোদন দেন। এর প্রেক্ষিতে ২৫টি দোকান হয়েছে। এখন বর্তমান মেয়র সেটাকে সংশোধন করে নতুন করে আরেকটি প্ল্যান অনুমোদন দেন। এটার আলোকে অবকাঠামো করা হচ্ছে। নোটিশদাতারা বিপ্লব উদ্যানের পরিবেশ রক্ষার জন্য এটা বন্ধ করতে চাচ্ছেন।












