বিপিএল আসরের নিলাম ২৩ নভেম্বর

স্পোর্টস ডেস্ক  | বৃহস্পতিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

নতুনভাবে বিপিএল শুরুর লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নতুন আসরের নিলামের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছে। বেশ কিছু নতুন নিয়ম, আর্থিক শর্ত আর কঠোর সময়সীমা মেনে এবার নিলামে অংশ নিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। ব্যাংক গ্যারান্টি থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের ক্যাটাগরি নির্ধারণ, সবকিছুতেই আসছে পরিবর্তন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি আমিনুল ইসলামের অফিস কক্ষে গতকাল বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই নিলামসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য ও বিসিবি পরিচালক শাখাওয়াত হোসেন জানান, দ্বাদশ বিপিএলের খেলোয়াড় নিলাম আগামী ২৩ নভেম্বর সকাল ১১টায় হোটেল লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত হবে। গত ৫ নভেম্বর দল চূড়ান্ত করার সময় গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার আহমেদ মিঠু জানিয়েছিলেন, নিলাম আয়োজনের সম্ভাব্য তারিখ ১৭ নভেম্বর। তবে চূড়ান্ত হওয়া পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বিপিএলে অংশগ্রহণের শর্ত হিসেবে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে দুই কোটি টাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি ও ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দিতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হওয়ায় নিলামের তারিখ কিছুটা পেছানো হয়েছে। ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়া কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিলামে অংশ নিতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন,‘আমরা শুরু থেকেই বিপিএলে আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করছি। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হয়েছে বিসিবির অর্থ বিভাগে ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দেওয়ার জন্য। কেউ যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেটা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাকে নিলামে বসতে দেওয়া হবে না। ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি যদি কেউ দিতে না পারে, সে ক্ষেত্রে ওই দলের জমা দেওয়া ২ কোটি টাকা ফরফিট হয়ে যাবে মানে বাংলায় যেটা বলে তামাদি। এই টাকা চলে যাবে আমাদের কোষাগারে, তারা সেটা আর ফেরত চেয়ে অনুরোধ করতে পারবে না।’ সবশেষ খবর অনুযায়ী, বিপিএলের পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কেউই এখনো ব্যাংক গ্যারান্টি বাবদ ১০ কোটি টাকার পে অর্ডার বিসিবির অর্থ বিভাগে জমা দেয়নি। এই অর্থ জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড় কেনার জন্য ক্যাটাগরি ভেদে নতুন আর্থিক নিয়মনীতিও নির্ধারণ করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ টাকা, প্রতি ডাকে মূল্য বাড়ানো যাবে পাঁচ লাখ টাকা করে। বিদেশিদের ক্ষেত্রে ‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার, প্রতি ডাকে মূল্য বাড়বে পাঁচ হাজার ডলার করে। স্থানীয়দের জন্য ৬টি এবং বিদেশিদের জন্য ৫টি ক্যাটাগরি থাকবে। বিভিন্ন শ্রেণিতে খেলোয়াড়দের ভিত্তিমূল্য ও নীতিমালা ইতোমধ্যে পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে পাঠানো হয়েছে তাদের পর্যবেক্ষণের জন্য। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোতে তাদের মতামত ২১ নভেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে, এরপর তা অনুমোদন সাপেক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি দল নিলামের আগে সর্বোচ্চ দুজন স্থানীয় (‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটাগরি) ও এক থেকে দুজন বিদেশি খেলোয়াড় সরাসরি দলে নিতে পারবে। তবে এসব চুক্তি হবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমোদনসাপেক্ষে। নিলাম হবে দুই ধাপে; প্রথম ধাপে স্থানীয় ক্রিকেটারদের এবং পরের ধাপে বিদেশি ক্রিকেটারদের। প্রতিটি দলকে অন্তত ১৩ জন স্থানীয় খেলোয়াড় নিতে হবে নিলাম থেকে। একটি দল সর্বাধিক ১৬ জন স্থানীয় খেলোয়াড় নিবন্ধন করতে পারবে। স্থানীয়দের জন্য বাজেট নির্ধারিত সাড়ে চার কোটি টাকা, তবে সরাসরি চুক্তি করা দুজনের পারিশ্রমিক এই বাজেটের বাইরে থাকবে। বিদেশি ক্রিকেটারদের নিবন্ধনে কোনো সীমা নেই। তবে এক ম্যাচে খেলানো যাবে কমপক্ষে দুজন ও সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলোয়াড়। নিলাম থেকে অন্তত দুজন বিদেশি খেলোয়াড় নিতে হবে। বিদেশি খেলোয়াড়দের কিনতে প্রতিটি দল সর্বোচ্চ সাড়ে তিন লাখ মার্কিন ডলার খরচ করতে পারবে। সব খেলোয়াড়কেই দলে যোগ দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটারদের আলাদা ফর্মে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। প্রতিটি ম্যাচের অন্তত চার ঘণ্টা আগে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড পাঠাতে হবে বিসিবির ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের নির্ধারিত ইমেইলে।

ভবিষ্যতের রিটেনশন নীতিতেও এসেছে নতুন ধারা। এবারের আসর হবে নতুন মালিকানা চক্রের প্রথম মৌসুম। ত্রয়োদশ আসর থেকে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বাধিক দুজন স্থানীয় ও দুজন বিদেশি খেলোয়াড় ধরে রাখতে পারবে। নতুন দলগুলোও একই নিয়মে নিলামের আগে খেলোয়াড় চুক্তিভুক্ত করতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকম্পাউন্ড মিক্সড ইভেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাইয়ে ভ্রাম্যমাণ পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ