বিপজ্জনকভাবে সরে গেছে ডাউন অংশের মাটি

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া | শনিবার , ১ মার্চ, ২০২৫ at ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ১৫০ কিলোমিটার। দেশের জাতীয় মহাসড়কগুলোর মধ্যে ব্যস্ততম এই সড়কটির অবস্থানও এক নম্বরে (এন)। কিন্তু এটি নামেই জাতীয় মহাসড়ক হিসেবে পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। সংশ্লিষ্টরা বলছেনসড়কটিকে আলাদা লেনে রূপান্তরের বিষয়টি কার্যত স্থবির হয়ে রয়েছে। এতে মাত্র ২২ ফুট প্রস্তের এই মহাসড়কটিতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। বিশেষ করে ২২ ফুট প্রস্থের এই মহাসড়কটির দুই পাশের শত শত শোল্ডার (ডাউন) অংশ গভীর ও মাঝারি খাদে তথা ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, আলাদা ওয়ানওয়ে লেন না থাকায় সড়কটিতে দূরপাল্লার পরিবহনের পাশাপাশি চার চাকার লেগুনা, ইজিবাইকসহ তিন চাকার যানবাহনও চলাচল করায় মুহূর্তেই ঘটছে বড় বড় দুর্ঘটনা। এতে সড়কেই ঝরে পড়ছে তাজা প্রাণ। পাশাপাশি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সড়ক থেকে গভীর খাদে ছিটকে পড়ছে যানবাহনগুলোও।

সরেজমিন আরও দেখা গেছে, চট্টগ্রামকক্সবাজার এই মহাসড়কটিতে চকরিয়ার অংশ রয়েছে দীর্ঘ ৩৯ কিলোমিটার। তম্মধ্যে উত্তর সীমান্তের আজিজনগর থেকে হারবাং, বরইতলী, পৌরসভা হয়ে দক্ষিণাংশের ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা ও খুটাখালী পর্যন্ত সড়কটির দুই পাশের ডাউন অংশে মাটি বা ম্যাকাডম সরে গিয়ে মারাত্মকভাবে গভীর ও মাঝারি খাদের সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। এতে দ্রুতগামী যানবাহনগুলো নিজস্ব গতিতে চলাচল করতে গিয়ে বাঁক অতিক্রম করাসহ দুই পাশের গভীর ও মাঝারি খাদের সামনে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে।

ব্যস্ততম চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কটিতে চলাচলরত ৪৬এক্সপ্রেসের ডাবল ডেকার স্লিপার বাসের চালক মো. ভুবন ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, দেশের ব্যস্ততম মহাসড়ক হচ্ছে চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়ক। এই সড়ক দিয়েই যেতে হয় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত নগরী পর্যটন জেলা কক্সবাজারে। কিন্তু মহাসড়কটি যে এখনও বিকল্প লেনে চালু হয়নি তা খুবই উদ্বেগের এবং দুঃখজনক। সচেতন এই চালক আরও বলেন, ওয়ানওয়ে না হওয়ায় প্রতিনিয়ত নিজের এবং যাত্রীদের প্রাণ হাতে নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে ব্যস্ততম এই মহাসড়কটিতে। যেভাবে এই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে সে তুলনায় এই মহাসড়কটি অন্তত ৬ বা ৮ লেনে রূপান্তর করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ চকরিয়া উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) কুতুব উদ্দিন তালুকদার দৈনিক আজাদীকে বলেন, ব্যস্ততম চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কটির চকরিয়ার ৩৯ কিলোমিটার অংশে দুই পাশের অসংখ্য স্থানের মাটি বা ম্যাকাডম সরে গিয়ে যে গভীর ও মাঝারি খাদের সৃষ্টি হয়েছে সেসব অংশ ভরাট করার কাজ শুরু করা হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে। আগামী ঈদের আগেই এই মহাসড়কটি যাতে নিরাপদ করা যায় সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে তৎপরতা চলমান রয়েছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, দেশের অন্যান্য মহাসড়কের মতো আলাদা লেনে রূপান্তরের বিষয়টি বেশ সময় সাপেক্ষ। তাই বিদ্যমান ২২ ফুট প্রস্তের এই মহাসড়কটির প্রশস্থতা বাড়ানোসহ দুই পাশের যেসব স্থানের ডাউন অংশে গভীর ও মাঝারি খাদ সৃষ্টি হয়েছে সেখানে মাটি ফেলে বিটুমিনাস সড়কটির সঙ্গে সমান্তরাল করার কাজ শুরু করা হয়েছে প্রধান প্রকৌশলীর নির্দেশনায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধএকটি সেতুর জন্য ৫৪ বছরের অপেক্ষা