দেশে ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল উৎপাদন উৎসাহিত করতে বিনিয়োগকারীদের শর্তসাপেক্ষে কর সুবিধা দিয়েছে সরকার। গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে এই সুবিধা ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর ধরা হয়, যা ২০৩২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নিবন্ধিত (দেশীয় ও জয়েন্ট ভেঞ্চার) অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনক্রিডেন্স (এপিআই) মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে আয়কর থেকে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা পেতে এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে তার নিজস্ব কারখানায় স্থানীয়ভাবে এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদন করতে হবে। ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০৩২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সম্পূর্ণ করমুক্ত সুবিধা পেতে এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রতি বছর অন্তত ৫টি নতুন এপিআই ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদন করতে হবে। ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০৩২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত হ্রাসকৃত ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে আয়কর প্রদান সাপেক্ষে এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে তার নিজস্ব কারখানায় প্রতি বছর ৩টি করে নতুন এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে হবে। সকল এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলক বার্ষিক টার্নওভারের এক শতাংশ গবেষণা উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে এবং একাডেমিক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা প্রতি বছর বাড়াতে হবে। এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রতি বছর বিধি মোতাবেক ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে প্রত্যয়নপত্র সঠিকভাবে দাখিল করতে হবে। মানহীন এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনের কারণে কোনো বছরে সরকারি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জরিমানা আরোপিত হলে ওই বছরের এই প্রজ্ঞাপনের সুবিধা বাতিল হবে। এই প্রজ্ঞাপনের অধীন আয়কর অব্যাহতি সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে তফসিলের বিধান মোতাবেক এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া প্রজ্ঞাপনের অধীন অনুমোদনপ্রাপ্ত এপিআই মলিকিউল ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে এই অর্ডিনেন্সের নিয়ম পরিপালন করতে হবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে উৎপাদিত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। বাংলাদেশ বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। এপিআই না থাকায় ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত এপিআইয়ের প্রায় ৯৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। ওষুধ খাতে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে ২০১৮ সাল থেকে এপিআই ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদন-রপ্তানি নীতি করা হয়। ওই নীতিমালায় বাংলাদেশে নিবন্ধিত সব এপিআই ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদনকারীদের জন্য কর অবকাশ সুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল।