সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ফকিরহাটে রেলক্রসিংয়ে পুলিশ ভ্যানে ট্রেনের ধাক্কার ঘটনায় গেটম্যানের অবহেলাকে দায়ী করছেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা। গেটম্যান দীপু দুর্ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন। স্থানীয়রা বলছেন, গতকাল সকাল থেকে তিনি রেলগেটেই ছিলেন না। দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রেললাইনের পাশে প্রায় ৩০ ফুট দূরত্বে মুরগি ও কাঁচাবাজারের দোকানদার মো. তারেক বলেন, সে সময় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। পুলিশের গাড়িটি ধীরে ধীরে রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। গাড়ির ২ পাশের গ্লাস উঠানো ছিল। ট্রেন যখন ৫০ গজ দূরে এবং হুইসেল বাজিয়ে যাচ্ছিল তখন আমরা ট্রেন দেখে সবাই চিৎকার করি। তিনি জানান, রেলক্রসিংয়ের বার দুর্ঘটনার সময় ওঠানো ছিল। দুর্ঘটনার পর দেখা যায় গেটম্যানের রুমে তালা ঝুলছিল।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন এ রেলক্রসিংয়ে প্রায় ৪০টি ট্রেন আসা–যাওয়া করে। গেটঘর এবং রেলক্রসিং বারও আছে। তবে এখানে গেটম্যান কয়েকদিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন। যার কারণে ক্রসিংয়ের বারও ওঠানো থাকে। দুর্ঘটনায় আহত পুলিশদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে সিএনজি টেক্সিতে তোলা হয় তার চালক জসিম উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনার আগে ট্রেন অনেক হুইসেল দিয়েছে। আমরা হাত দিয়ে ইশারা করেছি চালককে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
জানা যায়, গেটম্যান দীপু প্রায় তিন বছর ধরে বিনা বেতনে কাজ করছেন। যে আউটসোর্সিংয়ে তিনি কাজ করেন ৩ বছর ধরে বেতন হয় না। ঊর্ধ্বতনদের জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি। প্রতিদিন সকালে তিনি কাজে এলেও, গত কয়েকদিন
আসেননি বলে জানান স্থানীয়রা। এদিকে দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে রেলের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেলের বিভাগীয় (পূর্বাঞ্চল) ট্রাফিক অফিসার আনিসুর রহমান মোবাইলে বলেন, দুর্ঘটনার খবর আমাদের কেউ জানায়নি। তাই ঘটনাস্থলে কাউকে পাঠানো হয়নি। তবে সেখানে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী গিয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান দীপুর না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো আমার জানা নেই।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী বলেন, এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। গেটম্যান না থাকার বিষয়টিও তদন্ত করা হবে।