বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াকে উৎসাহিত করা সমীচীন নয়

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা সভায় মাহবুব তালুকদার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াকে উৎসাহিত করা সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ৫৫ দিন মেয়াদ থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, তার আগে আমরা আমাদের দায়িত্ব সুসম্পন্ন করতে চাই। বাংলায় প্রবাদ আছে, যার শেষ ভালো তার সব ভালো। কাজেই এই শেষ ভালোটাকে আমরা সব ভালোর মধ্যে নিয়ে আসতে চাই।
চতুর্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে যে, ৩৬০ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন-পত্রিকা মতে। আর ১৬০০ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন অন্যান্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এটা একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আমাদের নতুন করে চিন্তা করতে হবে যে, নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করলে এ অবস্থা থেকে আমরা উদ্ধার হতে পারি কিনা। আগামীতে নির্বাচন কমিশনে যারা আসবেন, তারা নিশ্চয়ই এ বিষয়গুলো ভেবে দেখবেন। কারণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াকে উৎসাহিত করা বোধ হয় সম্ভব নয়, সমীচীনও নয়। মাহবুব তালুকদার বলেন, ৪র্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে। পরবর্তী পর্যায়ের ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। আমরা একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি যে, ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করব সর্বত্র। এসব বিষয় নিয়ে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। উনারা উনাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যেসব নির্বাচন হয়েছে, সামনের নির্বাচনগুলো তার চেয়ে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, আরও সুন্দর নির্বাচন কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। আমরা আরও সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সফলতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একেকজনের একেক রকম অনুভূতি। আমার অনুভূতি এক রকম। আমার আরও চারজন সহকর্মী আছেন, তাদের অনুভূতি অন্যরকম। আমাদের ব্যক্তিগত অনুভূতির কোনো মূল্যায়ন করা এখানে উচিত নয়। আমাদের কমিশন যে অনুভূতি ব্যক্ত করেছে তা আমারও। কারণ একটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আমি বিশ্বাস করি। এককভাবে কোনও বক্তব্য এখানে রাখতে চাই না।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুরু হওয়া সংলাপে কোনো সুপারিশ করবেন কিনা জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্য সমীচীন হবে না। যদি কখনও কেউ মনে করেন যে আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে তারা কিছু গ্রহণ করবেন, তখন আমরা হয়ত আমাদের অভিজ্ঞতা বলব। এ মুহূর্তে কিছু বলা উচিত হবে না।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ্‌ মোহাম্মদ তানভীর, র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম ইউসুফ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদার, জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০
পরবর্তী নিবন্ধরাজস্বে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় বাধা মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি