বিধি-নিষেধ উপেক্ষা, ৮২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১২ জুলাই, ২০২১ at ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে চলমান বিধি-নিষেধ বহাল থাকবে আগামী বুধবার রাত ১২ টা পর্যন্ত। অথচ গতকাল রোববার দিনভর নগরে সরকার নির্দেশিত সেই বিধি-নিষেধ ছিল প্রায় উপেক্ষিত। সাধারণ মানুষের চলাফেরা, হাব-ভাব দেখে মনেই হয়নি ‘লকডাউন’ চলছে দেশে! এমনকি বেশিরভাগ পথচারীর মুখে ছিল না মাস্ক। তাদের দেখে অনেকের মন্তব্য ছিল, ‘মাস্কহীন লোকগুলো কি কোভিড-১৯ এর চেয়েও শক্তিশালী?’
অবশ্য বিধি-নিষেধ কার্যকরে মাঠে ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, সিএমপিসহ সংশ্লিষ্টরা। সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হয়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয় বিধিনিষেধ। প্রথম দফায় ৭ জুলাই পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় তা বাড়ানো হয় ১৪ জুলাই পর্যন্ত। ওই হিসেবে গতকাল ছিল চলমান বিধিনিষেদের ১১ তম দিন।
এদিন শহরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে দেখা যায়, রাস্তাঘাটে লোক চলাচল ছিল স্বাভাবিক। গণপরিবহন বন্ধ ছিল। তবে সড়কজুড়ে ছিল রিকশা ও প্রাইভেট গাড়ির দাফট। অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধ ছিল না। গার্মেন্টস ও কল-কারখানা খোলা থাকায় চলেছে রিজার্ভ বাস ও হিউম্যান হলার। সেখানে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা হয়নি। আবার কিছু কিছু বাস-হিউম্যান হলার রিজার্ভ সাইনবোর্ড লাগিয়ে লোকাল যাত্রী পরিবহন করেছে বলে অভিযোগ আছে। এছাড়া সংখ্যায় কম হলে দিনভর সড়কে দেখা গেছে সিএনজি। চকবাজার, মুরাদপুর, কোতোয়ালীসহ নগরজুড়ে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে খোলা ছিল দোকানপাট। অবশ্য বড় বড় শপিং মলগুলো বন্ধ ছিল।
অভিযান : গতকাল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন ১৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে না চলায় বিভিন্ন দোকান, রেস্টুরেন্ট ও শপিং মলে অভিযান পরিচালনা করে অর্থদণ্ড প্রদান করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে সচেতন করা হয়।

অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোজাম্মেল হক চৌধুরী ডবলমুরিং এলাকায় আট মামলায় ছয় হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। এছাড়া চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী। তিনি আট মামলায় ৬০০ টাকা জরিমানা করেন।
পতেঙ্গা, বন্দর ও ইপিজেড এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা জান্নাতের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে চার মামলায় ৬০০ টাকা, চকবাজার এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে অভিযানে আট মামলায় চার হাজার ৩০০টাকা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী পাঁচলাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এক মামলায় ২০০ টাকা, খুলশী ও বায়েজিদ এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজিব হোসেন আট মামলায় দুই হাজার ৩০০ টাকা, কোতোয়ালি ও সদরঘাট এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন দুই হাজার ১০০ টাকা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন পাহাড়তলি ও আকবরশাহ এলাকায় পাঁচ মামলায় এক হাজার ৫০০ টাকা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান পতেঙ্গা ও ইপিজেড এলাকায় চার মামলায় তিন হাজার টাকা, খুলশী ও বায়েজিদ এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তাহমিনা শারমিন ছয় মামলায় ৮০০ টাকা, হালিশহর ও মুরাদপুর এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস এক মামলায় এক হাজার টাকা, আকবরশাহ এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত ছয় মামলায় তিন হাজার ৩০০ টাকা, পাহাড়তলি ও আকবরশাহ তিন মামলায় ৯০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছাইন মুহাম্মদ এবং কোতোয়ালি ও সদরঘাটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন চার মামলায় দুই ৪০০ টাকা জরিমানা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাইয় শিল্প এলাকা বন্যহাতির তাণ্ডব
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফ ক্যাম্প থেকে উখিয়ায় দু’দিনে ২৩২ রোহিঙ্গা স্থানান্তর