ভোক্তার বদলে এখন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করেই এ খাতের নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে এক আলোচনা সভায় অভিযোগ করেছেন কয়েকজন বক্তা। আর এ খাতের নীতি নির্ধারণী পদক্ষেপের ক্ষেত্রে দায়মুক্তি দিয়ে প্রণয়ন করা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন’টিকে ভয়ংকর ও জনস্বার্থ বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন দুইজন সংসদ সদস্য। গতকাল শনিবার বিদ্যুৎ–জ্বালানি খাতের হালচিত্র ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক নাগরিক সভায় এমন পর্যবেক্ষণ উঠে আসে।
ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ক্যাব এর সংস্কার প্রস্তাব : প্রেক্ষিত জ্বালানি সংকট ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন’ শীর্ষক এ আলোচনায় রাজনীতিবিদ, অধিকারকর্মী, সাবেক আমলা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মতামত তুলে ধরেন। তারা ব্যক্তি উদ্যোগ এবং আমদানি নির্ভরতার পরিবর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের নিজস্ব বিনিয়োগ এবং ব্যয়বহুল কয়লা ও তেলের তুলনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অধিক নজর দেওয়ার তাগিদ দেন। খবর বিডিনিউজের।
অপরদিকে সভার আয়োজক কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) মতে, দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ এর বেপরোয়া ব্যবহারে প্রতিযোগিতাবিহীন উচ্চ মূল্যের সুবিধা নিতে ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে এ খাতের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি বিদ্যুৎ–জ্বালানি খাতে প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগ নিষিদ্ধসহ একগুচ্ছ সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি তুলেছে। ক্যাবের এসব প্রস্তাবের সঙ্গে সব বক্তা একমত পোষণ করেন।
সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, এখন বিদ্যুতের উৎপাদন হচ্ছে কিন্তু ব্যবহার করতে পারছি না। বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। রাজনীতিতে ইনডেমনিটি একটি ঘৃণিত শব্দ। অথচ জ্বালানি খাতে এই দায়মুক্তি দিয়ে রাখা হয়েছে দশককাল ধরে। ২০২২ সালে এসে বিদ্যুৎখাতের দায়মুক্তি আইনটি আবার সংশোধিত হয়েছে। আগের সরকারগুলোর মতো লুণ্ঠনবৃত্তি অব্যাহত রয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পুরো জ্বালানি খাত এখন আমদানি নির্ভর হয়ে গেছে। অথচ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে আমরা কাজে লাগাচ্ছি না। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে ১ টাকা দামের গ্যাস এখন ৮৩ টাকা খরচ করেও আমদানি হচ্ছে। সমুদ্র বিজয়ের ১০ বছর পরও সেখানে কিছুই করা গেল না। এলএনজি লবিই মূলত জ্বালানি খাতের সব নীতি নির্ধারণ করে থাকে।