বিদ্যুতে আদানি পর্বের শুরু

| শুক্রবার , ১০ মার্চ, ২০২৩ at ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসা শুরু হয়েছে; পরীক্ষামূলক কাজ শেষের এক দিনের মাথায় জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে আলোচিত ভারতীয় কোম্পানিটির বিদ্যুৎ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা ৩৮ মিনিটে ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানির গড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন শুরুর কথা জানান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা।

বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান জানান, সন্ধ্যা নাগাদ ৭০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আসছিল। ক্রমান্বয়ে চাহিদার আলোকে তা বাড়তে থাকবে। পিডিবির ওই কর্মকর্তা জানান, প্রথম মিনিটে ২৫ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আসে। পরের সময়গুলোতে ধাপে ধাপে বিদ্যুতের সঞ্চালন বাড়বে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সীমান্তের কাছে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়খন্ডে স্থাপিত

আদানির এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের সক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। বাংলাদেশে চাইলে সক্ষমতার পুরোটাই আমদানি করতে পারবে বলে জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের।

বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা বদরুদ্দোজা সুমন জানান, আদানির ঝাড়খণ্ডের কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনে যুক্ত করতে বুধবার প্রস্তুতি শেষ হয়। এরপর তা আদানি ও পিডিবিকে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আদানির গড্ডা কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য পিজিসিবি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী মনাকষা থেকে রহনপুর হয়ে বগুড়া পর্যন্ত ১৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং বগুড়ায় ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ করেছে।

নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের লক্ষ্যে বিদ্যুতের বহুমুখী জোগান নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে ভারত থেকে আমদানি শুরু করে সরকার। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হয়ে দৈনিক ১০০০ মেগাওয়াট এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সূর্যমনি থেকে কুমিল্লা হয়ে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে। শেয়ার দরে কারচুরপি নিয়ে শোরগোল ওঠার পর সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় থাকা আদানি গ্রুপ কিছুটা টালমাটাল হয়ে পড়ে।

এরমধ্যেই বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার দাম বেশি বলে খবর বেরিয়েছে। এজন্য ছয় বছর আগে করা আদানি পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তি পর্যালোচনার অনুরোধ করা হয়।

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেওয়ার খবর প্রকাশের পর এ নিয়ে আলোচনা করতে আদানির একটি প্রতিনিধি দল ওই মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় এসেছিল বলেও খবর আসে। তখন এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনার কথা এসেছিল সংবাদমাধ্যমে। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বিদ্যুৎ বিভাগ ও আদানি পাওয়ারের মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার এ ক্রয় চুক্তি হয়। চুক্তির আওতায় আদানি ঝাড়খন্ডে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। সেই বিদ্যুৎ দেশে এনে জাতীয় গ্রিডে যোগ করতে বিশেষ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় দুটি সাবস্টেশন ও অন্যান্য সঞ্চালন স্থাপনা নির্মাণ করছে পিজিসিবি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখালেদার মুক্তির মেয়াদ আবার বাড়াতে পরিবারের আবেদন
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে বালু গিলে খাচ্ছে জনপদ, প্রকৃতি