নগরীর খুলশী থানাধীন জালালাবাদ হাউজিং এলাকায় চারদিনের মাথায় আবারও লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জালালাবাদ জমির হাউজিং এলাকার রূপসী পাহাড়ের ওপর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তার নাম মো. খোকন (৩০)। তিনি পেশায় কৃষক। বিদ্যুতের ওভারহেড ট্রান্সমিশন টাওয়ার থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খোকন ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান আজাদীকে বলেন, জালালাবাদ হাউজিং এলাকায় বিদ্যুতের ওভারহেড ট্রান্সমিশন টাওয়ারে এক ব্যক্তির লাশ ঝুলতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম লাশটি উদ্ধার করেছে। লাশটা এমনভাবে বিকৃত হয়ে গেছে যে, বয়স ও পরিচয় উদঘাটনে সময় লেগেছে আমাদের। পরে জানতে পারি তিনি ওই এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে। মাত্র চারদিন আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভোরে খুলশী থানার জালালাবাদ জমির হাউজিং এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে নিজাম পাশা নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিজাম পাশাকে খুন করে লাশটি ময়লা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় ওই ভবনের দারোয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত ২৯ সেপ্টেম্বর। সে খুন করার কথা স্বীকার করে পুলিশকে জানিয়েছে, তার পরিচিত লোককে ঐ ভবনে রঙ করার কাজ না দেওয়া এবং তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে নিজাম পাশাকে খুন করেছে সে।
গতকাল পাওয়া লাশের ব্যাপারে খুলশী থানার ওসি শাহীনুজ্জামান আরও বলেন, চারদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন খোকন। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে তিন চার দিন আগে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশটি অর্ধগলিত। ধারণা করছি এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটিতে চারদিনের মধ্যে দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী মনে করছে এলাকাটি শহরের একপাশে হওয়ায় এবং পাশে পাহাড় থাকায় অপরাধীরা এটিকে ‘ক্রাইম জোন’ হিসেবে ব্যবহার করছে। এলাকাবাসীর দাবির সাথে দ্বিমত পোষণ না করে ওসি খুলশী আজাদীকে বলেন, এমন না যে, অপরাধীরা বাইরে খুন করে লাশ এখানে এনে ফেলছে। যা ঘটছে এখানেই ঘটছে এবং ঘটনাগুলো ঘটছে তুচ্ছ কারণে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে। আশা করছি এসব অপরাধীদের অচিরেই আমরা দমন করতে পারবো। আমরা ভবন মালিক নিজাম পাশা খুনের আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। খোকন খুনে জড়িতদেরও গ্রেপ্তারে সমর্থ হবো।