৫৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ নুরউদ্দীন আশরাফী, তিনি বিদেশ ফেরত বাংলাদেশী যাত্রী, চলতি বছর মার্চ মাসের ২৫ তারিখ শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসছিলেন তিনি।
বিমান বন্দর হতে ভাড়াকৃত প্রাইভেটকার যোগে মালামাল নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানা এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন আশরাফী। বায়েজিদ থানাধীন লিংক রোড এলাকায় পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ব্যক্তি ওয়াকিটকি হাতে গাড়ি থামানোর সিগন্যাল দেয়। গাড়ি থামানোর সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রাইভেটকারে উঠে বসে এবং গাড়িতে অবৈধ মালামাল আছে বলে তল্লাশির জন্য মনছুরাবাদ ডিবি অফিসে নিয়া যাওয়ার কথা বলে রাওনা দেয়।
পরবর্তীতে মনছুরাবাদ ডিবি অফিসের দিকে না গিয়ে কোতোয়ালী থানাধীন টাইগারপাস হতে সিআরবিগামী কাঠের বাংলো সংলগ্ন পাকা রাস্তার উপর নিয়ে ভুক্তভোগী আশরাফী এবং তার সাথে থাকা আবছার (৫০) দ্বয়কে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সাথে থাকা ১২টি স্বর্ণের হাতের বালা, ৯টি স্বর্ণের রিং, ৬টি স্বর্ণের লকেটসহ সর্বমোট ৩০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার, ৩টি মোবাইল সেট, ৩টি dell ব্র্যান্ডরে ল্যাপটপ, ৬ র্কাটুন ESSE ব্র্যান্ডরে সিগারেট ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
পরে উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী আশরাফী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করে এবং একাধিক বিশ্বস্ত গুপ্তচরের দেওয়া তথ্য ব্যবহার করে ২৮ মার্চ চকবাজার থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেন সিফাত (২২) ও মুজিবুল হাসান তাসির (১৯ ) কে গ্রেফতার এবং তাদের হেফাজত হতে মামলার ঘটনায় ছিনতাইকৃত ১টি মোবাইল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা করে পুলিশ।
পরে গ্রেফতার আসামী দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন সিএমপি’র পাঁচলাইশ থানা এবং কোতোয়ালী থানাধীন রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে লুন্ঠিত স্বর্ণালংকারের আংশিক বিক্রয়লবদ্ধ নগদ অর্থ ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ১টি Esse Special Gold সিগারেটের প্যাকেট, ১টি Dell ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, ১টি মোবাইল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
সর্বশেষ রবিবার (৩০ মার্চ) গ্রেফতারকৃতর দেওয়া তথ্য মতে কোতোয়ালী থানা এবং চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত মোঃ শাহাদাত হোসেন @ সাজ্জাদ (৩৯), মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (২৬) এবং মোঃ হানিফ @ আসাদ (৩৮) দেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের হেফাজত হতে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত ২টি মোটরসাইকেল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানা ওসি ওয়াবেদুল হক বলেন, আসামীরা পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তাহারা নিজেদেরকে কখনো অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক, কখনো কাস্টমস কর্মকর্তা আবার কখনো ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে থাকে। উক্ত চক্রের একজন সদস্য চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের আশপাশ এলাকায় অবস্থান করে বিদেশ ফেরত বিভিন্ন যাত্রীদের গতিবিধি, তাদের পরিবহনকৃত গাড়ির তথ্য এবং যাত্রীদের অবয়বের বর্ণনা সংগ্রহ করে একাধিক ছিনতাইকারী চক্রের নিকট সরবরাহ করতেন।