নব্বই দিনের জন্য বিদেশে সহায়তা স্থগিত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার নির্বাহী আদেশ জারি করার পরপরই বিশ্বজুড়ে এ ধরনের প্রায় সব সহায়তা স্থগিত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সব কূটনৈতিক পোস্টে একটি তারবার্তা পাঠিয়েছেন, যে বার্তার কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) বৈশ্বিক কর্মসূচির জন্য কোটি কোটি ডলারের তহবিল হুমকির মুখে পড়েছে।
ওই বার্তাটি দেখার কথা জানিয়ে সিএনএন লিখেছে, কংগ্রেসে রিপাবলিকান এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে বিদেশে সহায়তা ক্রোধের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে, তবে এই সহায়তার পরিমাণ সার্বিক মার্কিন বাজেটের তুলনায় খুবই কম। নির্বাহী আদেশ এবং পরবর্তী তারবার্তার পর মানবিক সহায়তা কর্মসূচির কর্মকর্তারা বিপাকে পড়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
সিএনএন লিখেছে, ওই তারবার্তায় বিদেশের বিদ্যমান সহায়তা কর্মসূচি অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন সহায়তা স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিদেশে মার্কিন সহায়তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা পর্যালোচনার জন্য আগামী মাসে প্রশাসন মানদণ্ড তৈরি করবে বলে তারবার্তায় বলা হয়েছে। এই পর্যালোচনার পরে সহায়তা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া, সংশোধন করা বা সমাপ্ত করা হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তারবার্তায় বলা হয়েছে, এই ধরনের পর্যালোচনা ৮৫ দিনের মধ্যে শেষ করা উচিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে জরুরি খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি ইসরায়েল ও মিশরের জন্য বিদেশি সামরিক অর্থায়নের প্রশ্নে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ওই তারবার্তায় বিদেশি সামরিক অর্থায়ন পাওয়া ইউক্রেন বা তাইওয়ানের মতো কোনো দেশের কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
এক মানবাধিকার কর্মকর্তা বলেছেন, অর্থায়ন স্থগিতের কারণে কর্মসূচিগুলো অবিশ্বাস্যভাবে বিঘ্নিত হবে এবং ওই তারবার্তার বিবরণ খুবই বাজে। অন্য এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, তারা নির্দিষ্ট অঞ্চলে সহায়তার কাটছাঁট বা পরিবর্তন হবে বলে ধারণা করলেও ব্যাপক পরিসরে এমন তাৎক্ষণিক স্থগিতাদেশের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।
তারা বলছেন, বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তার যে চাহিদা রয়েছে, সেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা দাতা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসূচি স্থগিত হওয়ার কারণে।
নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা ব্যবস্থা ও আমলাতন্ত্র আমেরিকান স্বার্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই আমেরিকান মূল্যবোধের পরিপন্থি। তবে এক কর্মকর্তা বলছেন, স্থগিতের নিশানায় পড়া বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সহায়তা কর্মসূচিগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রয়েছে। এসব কর্মসূচি দ্বিপক্ষীয় সমর্থন পেয়ে আসছিল। মহামারী যাতে না হয় তা আমাদের স্বার্থেই নিশ্চিত করা দরকার। বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা আমাদের স্বার্থেই প্রয়োজন।