ফটিকছড়ির আবু আহমেদ প্রকাশ সোনা আবুকে ডবলমুরিং থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা বিমানবন্দর হয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত রোববার বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতের দিকে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয় এবং গতকাল আদালতে পাঠানো হলে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক আবু আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ডবলমুরিং থানার ওসি কাজী মো. রফিক আহমেদ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আবু আহমেদ যাতে বিদেশ যেতে না পারে সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা ছিল। এরই প্রেক্ষিতে বিদেশে যেতে চাইলে ঢাকা বিমানবন্দর কতৃপক্ষ আবু আহমেদকে আটক করে আমাদের খবর দেয়। আমরা বিমানবন্দরে গিয়ে রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে আমাদের থানায় নিয়ে আসি। পরে তাকে আজকে (সোমবার) আদালতে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ডবলমুরিং থানাধীন মনছুরাবাদ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজহারনামীয় আসামি গ্রেপ্তার আবু আহমেদ। উক্ত হত্যা মামলাতেই আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি।
আদালতসূত্র জানায়, আবু আহমেদের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়। এলাকায় তিনি বিক্রি করতেন মুড়ি। কিন্তু পরে ১৯৯১ সালে শ্রমিক ভিসা নিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাইতে পাড়ি জমান এবং বনে যান সোনা ও হুন্ডি কারবারি। ২৪০ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ১৬০ টাকা পাচারের অভিযোগে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় ২০২০ সালের ১৮ মার্চ এ আবু আহমেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ৭২১ কোটি ১৭ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়ে সিআইডি ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে আদালতে। স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় অভিযুক্ত আবু আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট তার অবৈধ অর্থের খোঁজ পায়। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত ২১ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেয় সিআইডি।
সূত্র আরো জানায়, আবু আহমেদ চট্টগ্রামে অর্থ পাচার এবং স্বর্ণ ও অন্যান্য পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি ভবন, প্লট, বিলাসবহুল বাড়ি। দুবাইয়েও তার তিনটি দোকান রয়েছে। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে ফরহাদ ট্রেডিং, রিয়াল ট্রেডিং, নাইস টেলিকম সেন্টার, রূপা টেলিকমিউনিকেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ২১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন আবু আহমেদ। এসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের টাকা নিয়ে তিনি হুন্ডি ব্যবসা করেন। এছাড়া স্বর্ণ চোরাচালান করতে করতে তিনি পরিচিতি পান সোনা আবু নামে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ মিলেছে তার নামে কেনা ২৪টি জমির।