বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে বন্দরের দক্ষতা বাড়ানো হচ্ছে : আনিসুজ্জামান

মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের হার আরো বাড়াতে হবে

| মঙ্গলবার , ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে বন্দরের এফিশিয়েন্সি (দক্ষতা) বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া মূল্যস্ফীতি পাঁচ শতাংশের ঘরে নামিয়ে আনতে সুদের হার আরো বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। দেশে অনানুষ্ঠানিক খাতের পরিসর বিস্তৃত বলেই এ নীতি প্রয়োজন বলে মনে করেন। তার ভাষ্য, আমাদের মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে। সন্দেহ নেই যে এর কৃতিত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। উনি (গভর্নর) যে যুক্তিটা দিয়েছেন, আমার সে যুক্তির সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে একটা জায়গায় গিয়ে। যেহেতু আমার এখানে অনানুষ্ঠানিক খাত অনেক বিস্তৃত, সেখানে সুদহার আরো অনেক বাড়াতে হবে, যদি আপনি মূল্যস্ফীতি পাঁচে আনতে চান।

গতকাল সোমবার ঢাকার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের অর্থনীতি বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানে মূল্যস্ফীতি আরো কমে না আসা পর্যন্ত সুদের হার না কমানোর পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। পরে বক্তব্য দিতে এসে আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাতে সায় দিয়ে এ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, তারপর এখানে প্রশ্ন এসেছে, যদি আমি মূল্যস্ফীতি কমাতে না পারি, ঋণের খরচ কমাতে না পারি (সুদের কারণে), তাহলে আমাকে অন্য জায়গায় বিজনেস ফ্রেন্ডলি করতে হবে। খবর বিডিনিউজের।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কথা এসেছে। চিন্তা করে দেখেন। চট্টগ্রাম বন্দরে আমরা এখন আপনার কাস্টমস ইক্লিয়ারেন্সের জন্য বাঙ খুলে দেখতে হচ্ছে না, আমরা স্ক্যানার বসিয়ে দিয়ে এসেছি। স্ক্যানারে আপনার কন্টেনার যাবে, সমস্ত কাগজপত্র ডিজিটাল হয়ে গেছে এখন।

বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে বন্দরের ‘এফিশিয়েন্সি’ বাড়ানো হচ্ছে তুলে ধরে তিনি বলেন, আসলে এই যে এটার যে সমালোচনাটা হচ্ছে, এই পোর্টের ইফিশিয়েন্সি আমি যদি বাড়াতে না পারি, তাইলে তো আমি এখানে কস্ট অব ফান্ড কমাতে পারছি না। আহসান ভাইকে (গভর্নর) যদিও আমি সবসময় অনুরোধ করে যাব, আরেকটু কমান (সুদের হার)

বন্দরে বিদেশি কোম্পানি নিয়ে বিতর্কের প্রশ্নে তিনি বলেন, পলিসি সার্কেলে এ রকম থাকবেই, বিতর্ক থাকবেই। এবং এটাই তো

বলছি, কোহেরেন্স (সমন্বয়) আনতে হবে আমাকে। বিতর্কের মধ্য দিয়ে আসবে। অনেস্ট বিতর্ক হবে। ডেটাবেজ বিতর্ক হবে। এটার কারণ, এখানে কনসেনসাস নাই। সে কনসেনসাস আনতে হবে। বিতর্কের মধ্য দিয়ে আনতে হবে। অনেস্টলি বিতর্ক করতে হবে, যেটা শফিক (প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব) বারবার জোর দিয়েছে। আমরা বিতর্কের বিরোধী না, ডেটাবেজ, ফ্যাক্টবেসড হতে হবে সেটা। অবজেক্টিভ হতে হবে।

লালদিয়া কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ এ কোম্পানির সঙ্গে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রকল্প আকারে চুক্তি হয়েছে। যেখানে সম্পূর্ণ বিনিয়োগ করবে কোম্পানিটি। ২০৩০ সালের মধ্যে তিন বছরে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত ও এরপর পরিচালনার জন্য ৩০ বছরের চুক্তি হয়েছে কোম্পানিটির সঙ্গে। সেক্ষেত্রে সাইনিং মানি হিসেবে ২৫০ কোটি টাকা এবং নির্মাণকালে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা বলেছে এপিএম। সরকার থেকে কোনো অর্থায়ন বা গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, কর্মসংস্থান বাড়াতে কী করা লাগবে, সেটার জন্য প্রধান উপদেষ্টা আমার মনে হয় কয়েক ডজন গ্লোবাল বিজনেসেসের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার বড় একটা উপসংহার ছিল, যে করেই হোক আমাদের চিটাগাং পোর্টকে ইফিশিয়েন্ট করতে হবে। না হলে আমার ম্যানুফেকচারিং রেভ্যুলেশন হবে না। ম্যানুফেকচারিং হাব হিসেবে আমি ইমার্জ করতে পারব না, আমার এত ইনএফিশিয়েন্ট একটা পোর্ট নিয়ে।

তিনি বলেন, কিন্তু আপনি যদি দেখেন যে কীভাবে এই ডিবেটটাকে হাইজ্যাক করা হয়েছে। এই ডিবেটটাকে নেওয়া হয়েছে কিআপনি (সংবাদমাধ্যম) এমন সব টিনি গ্রুপকে যারা রিপ্রেজেন্ট করছেন, তাদের ভয়েসকে আপনি এমপ্লিফাই করছেন। যাদের কণ্ঠ সংবাদমাধ্যম তুলে ধরছে, তাদের এ বিষয়ে মিনিমাম আইডিয়া নাই।

তিনি বলেন, দেখা যাচ্ছে যে আপনি এই জবটা, এই গভর্নমেন্ট অ্যাচিভ করতে চাচ্ছে, কিন্তু আপনি (সংবাদমাধ্যম) হাইজ্যাক করতে চাচ্ছেন। যেই সমস্ত ভয়েসকে আপনি এমপ্লিফাই করছেন, তার মিনিমাম কোনো আইডিয়া নাই, কীভাবে একটা বন্দরকে ইফিশিয়েন্ট করা হয়। আপনি তিনচারবার তার লেখা দিচ্ছেন। সরকারের এ সিদ্ধান্ত ইতিহাসে ভালোভাবে মূল্যায়িত হবে বলে মনে করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যারিস্টার আনিস-মঞ্জুর নেতৃত্বে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধএকটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে প্রতারণা করছে : সালাহউদ্দিন