বিতর্কের দুনিয়ায় স্বাগতম

ছাবের আহমদ চৌধুরী | বুধবার , ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ at ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

এক সময় আমাদের দেশে বির্তক চর্চা ছিল শহরকেন্দ্রিক। বর্তমানে তা ধীরে ধীরে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তির এই আলোকবর্তিকা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে খুব কম প্রতিষ্ঠানই কাজ করছে। বিতর্ক জগতে প্রবাদ আছে ‘যুক্তিতে খুঁজি মুক্তি’। বিতর্ক অনেক প্রকার আছে যেমনআঞ্চলিক বিতর্ক, জুটি বিতর্ক, রম্য বিতর্ক, ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি বিতর্ক, এশিয়ান সংসদীয় বিতর্ক, একক বিতর্ক/বারোয়ারি বিতর্ক ও সনাতনী বিতর্ক। বিতর্কে দুটি দল থাকে, একটি পক্ষ দল এবং অন্যটি বিপক্ষ দল। যিনি বিতর্ক পরিচালনা করেন তাকে মডারেটর বলা হয়। উভয় দলে তিন থেকে পাঁচ জন করে বক্তা থাকেন এবং এখানে ৪/৫ মিনিট করে সময় দেওয়া হয়। বিতর্ক এক ধরনের শিল্প। একজন শিল্পী যেভাবে তার মনের কাঙ্ক্ষিত বিষয়কে চিত্রকর্মে ফুটিয়ে তোলেন, ঠিক তেমনি একজন বিতার্কিকও শিল্পীর ন্যায় কথা মালা সাজিয়ে তা অন্যের নিকট উপস্থাপন করেন। তবে তর্ক এবং বিতর্কের একটা মৌলিক পার্থক্য হলোবিতর্কে যুক্তি থাকে, আর তর্কে যুক্তি থাকে না। আবার যখন তর্কের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস, একগুয়েমি ও আবেগের উপস্থিতিকে প্রাধান্য দেয়, একজন বিতার্কিক তখন অসাধারণ উপস্থাপনার মাধ্যমে যুক্তি, তর্ক ও তথ্যের সমন্বয় ঘটান। বিতর্কের যুক্তিনির্ভরতা যেমন করে একজনকে নিজের অযৌক্তিক অবস্থান থেকে যৌক্তিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে পারে, ঠিক তেমনি সমাজের ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কারকেও দূরীভূত করতে পারে।

দেশে বিতর্ক চর্চার প্রচার ও প্রসারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর সমূহকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। বিতর্ক চর্চার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, উপকরণগত সহায়তা, জাতীয়ভাবে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন, স্থানীয় ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতর্ক চর্চাকে খুব সহজেই প্রসারিত করা সম্ভব। বিতার্কিকরা হয়ে উঠবে আগামী দিনে জাতির সবচেয়ে সচেতন কন্ঠস্বর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য বিএনসিসি ইউনিট চাই
পরবর্তী নিবন্ধমেঘের ভেলায় প্রজাপতি