সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা যদি সাফল্যের একটি মাপকাঠি হয়ে থাকে, তাহলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বিতর্কের ধারেকাছে আসতে পারবে না কোনো কিছু। আর এই আলোচনার পেছনে রয়েছে একটি মাছি।
বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী কমালা হ্যারিস-এই দুই প্রার্থীর সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও তাদের দু’জনের কোনো বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে এতটা আলোড়ন তোলেনি, যতটা আলোচনা হয়েছে বিতর্কের মঞ্চে হঠাৎ ঢুকে পড়া একটি মাছিকে নিয়ে।
মার্কিন টেলিভিশনগুলোতে সরাসরি প্রচারিত বিতর্ক অনুষ্ঠানে মাছিটি দেখা যাওয়ার পরের কয়েক ঘণ্টায় ‘দ্য ফ্লাই’ শব্দটি সাত লাখেরও বেশি বার টুইট করা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের পক্ষে প্রচারণাকারীরা এই ঘটনার পুরো ফায়দা তুলেছেন ‘ফ্লাইউইলভোটডটকম’ নামের একটি ডোমেইন কিনে নিয়ে, আর জো বাইডেনের একটি মাছি তাড়ানো লাঠি ধরে রাখা ছবিতে এরই মধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি লাইক পড়েছে।
মজার বিষয় হলো, এই মাছিটি দুই পক্ষের সমর্থকদেরই একই কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে। মাছিটি সম্পর্কে সবাই নানারকম হাস্যরসাত্মক মন্তব্য করছেন। এক ব্যক্তি মাছিটিকে ‘আমেরিকান হিরো’ আখ্যা দিয়েছেন, আবার আরেকজন বলেছেন মাছিটিই সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা। খবর বিবিসি বাংলার।
হোয়াইট হাউজের সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা কেলিয়ান কনওয়ে মাছিটিকে মেইল করে একটি ব্যালট পাঠাতে বলেছেন, অন্যদিকে রিপাবলিকান সেনেটর র্যান্ড পল কৌতুক করে বলেছেন যে মাছিটি ট্রাম্প প্রশাসনের গোপন রাষ্ট্রযন্ত্রের গোয়েন্দাগিরির প্রমাণ। মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারিও তাদের ওয়েবসাইটে ঘোষণা করেছে যে ‘মাছি’ শব্দটি সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ড করছে। এই ট্রেন্ডের সাথে যোগ দিতে অসংখ্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে মানুষ। নতুন করে তৈরি করা অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট এরই মধ্যে ১০ হাজারের বেশি ফলোয়ার পেয়েছে। মাছি বিষয়ক আলোচনায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন আরেক ব্যক্তি। শেষবার কবে প্রেসিডেন্ট বিতর্কে মাছি হাজির হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সেটি তুলে ধরেছেন তিনি। চার বছর আগে নির্বাচনের সময় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বিতর্ক চলাকালীন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের মাথায় মাছি বসেছিল বলে জানাচ্ছেন তিনি। তবে সেই মাছিটি আর মাইক পেন্সের মাথায় বসা মাছিটি একই মাছি কি-না, সে সম্পর্কে অবশ্য কিছু জানা যায়নি। তবে মাছি সংক্রান্ত সব আলোচনা যে কৌতুকের মধ্যেই শেষ হয়েছে, সেরকম কিন্তু নয়। কমেন্টেটর বেন শাপিরো ইঙ্গিত দিয়েছেন যে বিতর্কে আসলে কী হচ্ছে, সেখান থেকে মানুষকে বিচ্যুত করার অনুষঙ্গ হিসেবে এই মাছি নিয়ে এত আলোচনা করা হচ্ছে।