বীর বাঙালির বহু ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী এ পঞ্চাশ বছরে দেশের অনেক উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, শিল্প ও ব্যাংকিং খাত সহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। দেশের এতোসব উন্নয়নের মাঝে মানুষের চরিত্রের কতটা উন্নতি হয়েছে, তাও ভাবার বিষয়।
বর্তমানে দেশের সব জায়গায় অস্থিরতা, দুর্নীতি, অসঙ্গতি, অসদাচরণ, সাম্প্রদায়িকতা বিদ্যমান যা সমাজকে ক্রমশ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে শুধু যুবকরা নয়, অধিকাংশ শিশু-কিশোরদের আচরণও অশালীন। যথোপযুক্ত শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অভিভাবকদের নজরদারির অভাবে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে।
তারা ইভটিজিং, নেশাদ্রব্য ও অসংযত আচরণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে। চারদিকে চোখে পড়ে শিক্ষকের মানহানি, নারীর প্রতি সহিংসতা, রাজনৈতিক দলাদলি, বয়োজ্যেষ্ঠ ও গুণীজনদের প্রতি অশ্রদ্ধা। অনেকেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দুর্নীতির মতো ঘৃণিত কাজে লিপ্ত। আজকাল দেখা যাচ্ছে, শিশু- কিশোর ও যুবকদের ইন্টানেটের প্রতি অত্যধিক আসক্তি। ফলত তারুণ্যশক্তি লোপ ও মেধাশূন্য জাতির ইঙ্গিত দৃশ্যমান।
এ অপশক্তির কারণে জাতি এখনও স্বাধীনতা অর্জনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এসবের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে সমাজ তথা দেশ এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে।
এজন্য শিশু- কিশোরদের জন্য উদ্দীপনামূলক উদ্যোগ গ্রহণ ও ভালো কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান সহ অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
প্রশাসনে সুশাসন প্রতিষ্ঠা না পেলে এবং মানুষের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব ও সৎ চরিত্র দেখা না গেলে দেশের উন্নয়ন যথাযথ বলা যায় না। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে আদর্শ ও সৎ নাগরিক হিসেবে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। তবেই আমরা একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক বাসযোগ্য দেশ খুঁজে পাবো এবং এর মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। এটাই হোক আমাদের বিজয় মাসের প্রত্যাশা।












