শত বাধা–বিপত্তি পার করেও প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাটিয়ে দেওয়া জীবনের নামই ভালোবাসা। যে ভালোবাসায় অটুট থাকে সব বন্ধন, যে ভালোবাসায় থাকে উদারতা কিংবা এক বুক আশার বার্তা– ঠিক তেমন ভালোবাসাই টিকে থাকে যুগ থেকে যুগান্তরে। আমাদের শোবিজে তারকাদের মধ্যে রয়েছে তেমনই কিছু ভালোবাসার নজির। যারা শোবিজের বিয়ে বিচ্ছেদের ভিড়ে উদাহরণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেইসব তারকাদের সম্পর্কে…
সৈয়দ হাসান ইমাম–লায়লা হাসান : লায়লা হাসানের জন্য উপযুক্ত পাত্র খুঁজছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষ উপলক্ষে তিনটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম। সেখানেই লায়লা হাসানের সঙ্গে পরিচয়। এরপর ভয়েস অব আমেরিকায় একসঙ্গে নাটক করেন তারা। তবে এর নেপথ্যে ভূমিকা ছিল লায়লা হাসানের পরিবারের। অবশেষে ১৯৬৫ সালে তখনকার চিত্রনায়ক সৈয়দ হাসান ইমামের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন লায়লা হাসান। তাদের কোল আলো করে এসেছে তিন সন্তান। বিয়ের ৫৬ বছর পরও তাদের মধ্যে ভালোবাসার কমতি নেই। নিজেদের আঙিনায় ব্যস্ততার পাশাপাশি বিশ্বস্ততায় ভর করে যাপন করছেন সুখের সংসার।
রামেন্দু মজুমদার–ফেরদৌসী মজুমদার : একুশে পদক প্রাপ্ত দুই গুণীজন রামেন্দু মজুমদার ও ফেরদৌসী মজুমদার। ১৯৭০ সালের ১৪ মার্চ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। একে একে ৫২ বছর পার করেছেন একসঙ্গে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন মুনীর চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটক করতে গিয়ে তাদের প্রথম পরিচয়। রামেন্দু মজুমদারের দায়িত্ব ছিল রাতে ফেরদৌসী মজুমদারকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া। সেখান থেকে শুরু হয় তাদের প্রণয়। তবে তখনকার প্রেক্ষাপটে দুই ধর্মের মানুষের প্রেমকে সহজ করে দেখা হতো না। অনেক বাধা–বিপত্তি পেরিয়ে দুইজনের মিলন হয়। তাদের বিয়েতে সাহায্য করেছিলেন ফেরদৌসী মজুমদারের দুই ভাই মুনীর চৌধুরী ও কবির চৌধুরী। দু’জনের ৫২ বছরের সুখী বিবাহিত জীবনে আছে একমাত্র সন্তান ত্রপা মজুমদার।
রফিকুল আলম–আবিদা সুলতানা : দেশের জনপ্রিয় সংগীত জুটি রফিকুল আলম ও আবিদা সুলতানা। তারাও প্রেম করে বিয়ে করেছেন। বাংলাদেশ বেতারে তাদের দেখা হয় সত্তরের দশকে। তাদের পরিচয় করিয়ে দেন লাকী আখন্দ। গান গাইতে গাইতে তাদের প্রেম জমে ওঠে। ১৯৭৫ সালে বিয়ে করেন দুই সংগীত তারকা। সেই থেকে ৪৭ বছর ধরে ভালোবাসার জয়গান গেয়ে চলেছেন দু’জন।
কনকচাঁপা–মইনুল ইসলাম খান : কনকচাঁপার কিশোর বয়স থেকেই মইনুল ইসলাম খানের সঙ্গে পরিচয়। বিটিভির ‘নতুন কুঁড়ি’র শিল্পী ছিলেন কনকচাঁপা। সেখানেই দুজনের দেখা–সাক্ষাৎ হতো। কনকচাঁপার প্রথম গাওয়া গানের সুরকার ছিলেন সুরকার ও সংগীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খান। প্রথম গাওয়া গানের সুরের প্রেমে পড়েছিলেন কনকচাঁপা। একসময় সুর থেকে সুরকারের প্রতি ভালো লাগা অনুভব করেন। পরবর্তী সময়ে পারিবারিকভাবে তাদের দুজনের বিয়ে হয়। প্রায় তিন দশক একসঙ্গে পার করে দিয়েছেন এই তারকা দম্পতি।
নাঈম–শাবনাজ : নব্বই দশকের শুরুতে ‘চাঁদনী’ সিনেমা মাধ্যমে অভিষেক ঘটে সাড়া জাগানো এই তারকা জুটির। এরপর জুটি বেঁধে অনেক সিনেমা করেন। অভিনয় করতে করতেই দু’জন কাছাকাছি আসেন।