সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। আদালতে তোলার সময় আলোচিত এই বিচারপতিতে লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতাকে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। গতকাল শনিবার বিকাল ৪টার দিকে সিলেটের বিচারিক হাকিম আলমগীর হোসেন তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. জমশেদ আলী জানান। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবি। খবর বিডিনিউজের।
আদালতের পরিদর্শক জমশেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, জেল কোর্টের বিধান অনুযায়ী তিনি সাবেক বিচারপতি হিসেবে সুবিধা পাবেন। আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না; তবে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে আদালতকে জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকার লালবাগ, বাড্ডা ও আদাবর থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাবেক বিচারপতি মানিককে আদালতে নেওয়ার সময় গাড়ি থেকে নামানোর পর উত্তেজিত জনতা ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন। এ সময় কয়েকজন যুবক তার ওপর হামলার চেষ্টাও করেন। পরে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে তাকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ।
শুক্রবার রাতে মানিককে আটকের পর বিজিবির ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুন নবী সাংবাদিকদের বলেন, অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় দনা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় ১৯ আগস্ট সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর আদালতে মামলা করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে নোয়াখালীর জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটি করেন। এ ছাড়া একই ঘটনায় ঢাকার একটি আদালতে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি : এদিকে রাতে বিডিনিউজের অপর এক খবরে বলা হয়, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রাতে তাকে কারাগার থেকে এনে ভর্তি করা হয় বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া। রাত ১১টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাড়ে ৮টার পরে আমাকে জেল থেকে জেলার জানিয়েছেন, সাবেক বিচারপতি অসুস্থ, উনার অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। সেই হিসাবে আমরা আগে থেকে প্রস্তুত ছিলাম। ওটিতে নিয়ে যাওয়ার পর দেখা গেল উনার কিছু ইনজুরি আছে। আমাদের সার্জনরা চিকিৎসা দিয়েছেন। উনি বর্তমানে মোটামুটি ভালো আছেন। উনাকে জাস্ট অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।’ পরিচালক বলেন, ‘উনার আগে থেকেই মনে হয় হৃদরোগ ও ডায়বেটিসের সমস্যা রয়েছে। এজন্য আমরা অবজারভেশনে রেখেছি।’