একটি ফুল যত পবিত্র, ঠিক ততটুকুই পবিত্র পৃথিবীর প্রতিটা শিশু। কোরক বা কুঁড়ি ফুলে প্রস্ফুটিত হয়ে যেমন চারিদিকে সুরভী ছড়ায়, ঠিক তেমন একটি শিশুর জন্ম গোটা পৃথিবীর আশীর্বাদ, আলোকিত হয় চারিদিক। কিছু কিছু ফুল পূজিত হয় দেব–দেবীর আরাধনায়, কিছু ফুল ব্যবহৃত হয় জীবিকা নির্বাহের কাজে আবার কিছু ফুল অকালেই ঝড়ে পড়ে অযত্নে। ফুলের–ই মতো কিছু শিশু জীবিকা–নির্বাহের কাজে স্কুল না গিয়ে পথে– প্রান্তরে নানাভাবে জীবনযাপন করে, কিছু কিছু শিশু পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ঝরে পড়ছে অকালে, আবার কিছু শিশু পরিবারের অতি বিলাসিতার শিকার; যা শিশুর সৃজনশীল বিকাশের পথে প্রথম অন্তরায়। পরিবার হল শিশুর প্রথম ও প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিশুরা যা শোনে, যা দেখে সেটাই সে বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু সেই পরিবারেই যখন আবর্জনা থাকে, তখন সেই আবর্জনার গন্ধ তো সে নিষ্পাপ শিশু টির মধ্যেও ছড়াবে। আমরা বড়রা ছোটদের যখন কোনো ভুল করতে দেখি, তৎক্ষণাৎ শাসন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। একটু ভাবুন, ভুল কার? আমাদের নাকি শিশুদের? শিশুরা প্রথম যখন কথা বলতে চেষ্টা করে তখন শিশুটিকে আপনি আপনি করে কথা বললে শিশুটিও আপনাকে আপনি আপনি ছাড়া কথা বলবে না। তাই শিশুদের কোনো ভুলে শিশুটিকে দোষারোপ না করে নিজেদের ত্রুটিগুলো খুঁজলে বেশি উপকৃত হওয়া যায়। বড়রা যখন ছোটদের সামনে বিবাদ করেন, সে শিশুটিও তখন স্কুলে বন্ধুদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এভাবেই শিশুটির গোটা জীবনে বিবাদ নামক শব্দটি জড়িয়ে পড়ে। একসময় সে মেনে নিতে শুরু করে যে, আমার গুরুজনদের আমি এটা করতে দেখেছি, আমার সাথেও এটা হয়ে যাবে, এটাই নিয়ম! আর এই ভুলকে যে শিশু একবার মনে গেঁথে নিয়েছে, তার সৃজনশীল বিকাশ অসম্পূর্ণ। তাই ভুলেও কখনো এই ভুলটা করা অনুচিত। আপনার শিশুটি যখন মোবাইল কিংবা টিভি গেমস এ আসক্ত তখন আপনিও স্ব–স্ব কাজে ব্যস্ত। কাজের ফাঁকে আবার একটু শাসন করে নিজ কাজে মনোনিবেশ করলেন কিন্তু এটার চাইতে আপনি যদি শিশু টিকে এঙপিরিমেন্টমূলক খেলা অথবা কাগজ আর রং পেন্সিল দিয়ে শিশুদের ব্যস্ত রাখা যেত সেটাই বোধহয় আপনার, আমার, গোটা জাতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনতো।