ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ২৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক ১০ লেইনে উন্নীতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মূল সড়ক হবে ৬ লেইনের, ২ পাশে ২ লেইন করে ৪টি সার্ভিস লেইন থাকবে। কিন্তু সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দশ লেইন করা হলে সীতাকুণ্ডবাসী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সরকারের ব্যয় বহু গুণে বৃদ্ধি পাবে। তাই দুটি বিকল্প প্রস্তাবনা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে সীতাকুণ্ড নাগরিক সমাজ।
গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের মাধ্যমে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন সীতাকুণ্ড নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব মাস্টার আবুল কাশেম। এ সময় সীতাকুণ্ড সমাজ কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন, সীতাকুণ্ড সমিতির সহসভাপতি ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার আবুল হাসনাত, সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ মো. ফোরকান আবু ও সীতাকুণ্ড সমিতি চট্টগ্রামের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামরুল ইসলাম দুলু উপস্থিত ছিলেন।
স্মারলিপিতে বলা হয়, ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশ ঘনবসতিপূর্ণ ও জনবহুল। বিশেষ করে সীতাকুণ্ড পৌর সদর থেকে ফৌজদারহাট–বায়েজিদ লিংক রোড–মেরিন ড্রাইভ সড়ক পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। মহাসড়ক ১০ লেইনে উন্নীত হলে এই এলাকার অনেক সরকারি–বেসরকারি স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। এজন্য সরকারকে বিপুল অংকের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দুটি বিকল্প প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এক. দশ লেইন মহাসড়কের বিকল্প হিসাবে ফৌজদারহাট (ডিসি পার্ক) হতে মীরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উপর মেরিন ড্রাইভ সড়ক চার লেনে উন্নীত করা। টেকনাফ হতে কক্সবাজার পর্যন্ত ৯৮ কিমি এবং আনোয়ারা হতে কর্ণফুলী টানেল হয়ে ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এর ফলে কর্ণফুলী টানেল ব্যবহার শতভাগে উন্নীত হবে এবং রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়ক বেড়িবাঁধ হিসাবে সীতাকুণ্ড–মীরসরাইবাসীকে ঘূর্ণিঝড়–জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাব হলো, মহাসড়কের সীতাকুণ্ড পৌরসভা থেকে ফৌজদারহাট–বায়েজিদ লিংক রোড পর্যন্ত ২৫ কিমি চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করে আন্ডারপাস, ওভারপাস এবং সার্ভিস সড়ক করা হলে আগামী ২০/৩০ বছর ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের উল্লিখিত অংশে স্থানীয় মানুষের যাতায়াত সমস্যা যেমন নিরসন হবে, উচ্ছেদ থেকে রক্ষা পাবে শত শত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।