বিএনপি লাশ চায়, তাই উসকানি দিচ্ছে : কাদের

নিজের অধীনস্ত দপ্তরে স্বাগত জানালেন দুদককে

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

বিএনপি উসকানি দিয়ে লাশ ফেলতে চায় দাবি করে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথায় এই সতর্কবার্তা দেন তিনি।

আন্দোলনের জন্য চাঙা হয়ে ওঠা বিএনপিকে রাজপথে মোকাবেলার হুঁশিয়ারিও দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারা তাদের যত সন্ত্রাসী, বিভিন্ন মামলার আসামি, খুনের মাদকের সন্ত্রাসের, তাদেরকে জনসভা উপলক্ষে জড়ো করছে। আগেভাগে খুলনার সেই জায়গা দখল করছে, তাদের দলের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এখন তাদের উদ্দেশ্য হলো একটা ঘটনা ঘটানো, তাদের উদ্দেশ্য হলো তারা লাশ ফেলতে চায়। লাশ ফেলে আন্দোলন জমাতে চায়। খবর বিডিনিউজের।
এ বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকতে আওয়ামী লীগের সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যতই আজকে উস্কানি দেবে, আমরা সরকারি দল থেকে কোনো উস্কানি দেব না। আমরা হুট করে মাথা গরম করব? এটা উচিত নয়। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে চাই। আর তারা যদি তাদের ১৩/১৪ সালের মতো সহিংসতার অবস্থানে আসে, ১৩/১৪ সাল? এখন ২০২২ সাল। এখানে উদ্ভূত পরিস্থিতি যেভাবে মোকাবেলা করতে হয়, তার সমুচিৎ জবাব আমরা দেব।

রাজনৈতিক সংঘাতে কেউ নিহত হলে তার মূল দায় সরকারকে নিতে হবে-বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, এখন তারা যদি উস্কানি দিয়ে লাশ ফেলতে চায়, এখানে সরকার দায় নেবে না।

তবে রাজপথ আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি তো তাদেরকে বলেছি, আপনারা খেলতে চান? আসুন মাঠে। রাজপথ আমরা কাউকে ইজারা দিই নাই। আর ডিসেম্বরের রাজপথের চেতনা আমরা ধারণ করি। বিজয়ের চেতনা বিএনপির নেই, কাজেই রাজপথের যে মোকাবেলা, বিএনপির এখানে চ্যালেঞ্জ করার কিছু নেই।

অনুষ্ঠানে তিনি নিজের অধীনস্ত দপ্তরে দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি নির্মূলে আরও কার্যকর পদক্ষেপ চেয়ে এই আহ্বান জানান তিনি। সড়ক পরিবহনে দুদককে হানা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের টাকা জনগণের ট্যাঙের টাকা…এই টাকা যায় কোথায়? আমি আবারও বলছি, সচিক মহোদয়কে বলছি, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। কোথাও দুর্নীতিবাজ থাকতে পারবে না। এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করুক। যেখানে দুর্নীতি হওয়ার সেখানে তদন্ত করতেই হবে।

দুর্নীতিবাজদের কারণে সরকারের উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, এদেশে কিছু লোক আছে, তাদের আর কত টাকা, কত সম্পদ দরকার? তারা যদি নেতা হন, সেই নেতা বাংলাদেশে দরকার নাই। শেখ হাসিনার মতো সৎ নেতা চাই। তার মতো ভালো মানুষ পঁচাত্তর পরবর্তী আর একজনও আসেনি। কিন্তু আমরা যারা তার সঙ্গে রাজনীতি করি, আমরা কয়জন তাকে মেনে চলি? কয়জন জনপ্রতিনিধি জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে করেন, আর কয়জন পকেটের উন্নয়ন করেন? হিসাব দিতে হবে সকলকে। শেখ হাসিনা একা সৎ থাকবেন, দিন-রাত পরিশ্রম করবেন, আর আমরা টাকার পেছনে নিজের ভাগ্যোন্নয়নে পকেটের উন্নয়নে কাজ করবে, এটা হয় না।

নিজে কখনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেননি দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বুকে হাত দিয়ে বলব, আগে পাঁচ বছর ছিলাম প্রতিমন্ত্রী। এবার ১১ বছর হয়ে গেল। কোনো পারসেনটেজ, কোনো কমিশন কখনও নিইনি। কিন্তু কারা আমার সঙ্গে কাজ করে…এক পশলা বৃষ্টি হলে রাস্তা শেষ…এই রাস্তা করে কী লাভ?

সড়ক পরিবহন আইন হলেও তার বাস্তবায়ন এবং নীতিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, রাজনীতি ঠিক না হলে অন্য সবকিছু আমরা ঠিক করতে পারব না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবমির ভান করে প্রিজন ভ্যান থেকে পালালো আসামি
পরবর্তী নিবন্ধক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন