বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য শুনে ‘হনুমানও ভেংচি কাটে’ বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল চট্টগ্রাম সিটি কর্র্পোরেশনের বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের বিরুদ্ধে একগাদা দুর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যারা নিজেদের দুর্নীতির কারণে পর পর বাংলাদেশকে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিল তারা কারা? তারা হচ্ছে বিএনপি। দুর্নীতির ও টাকা পাচারের কারণে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শাস্তি হয়েছে। লুটের টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এফবিআই এসে বাংলাদেশে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। অর্থাৎ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিএনপি বিশ্ব চোরের উপাধি অর্জন করেছিল। সেই বিশ্বচোর বিএনপি যখন দুর্নীতির অভিযোগ করে তখন শুধু মানুষ নয় গাধাও হাসে, হনুমানও ভেংচি কাটে। তো মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব আপনি যে বক্তব্য রেখেছেন হনুমানও ভেংচি কাটছে এ জন্য।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি (মীর্জা ফখরুল) দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বলেছেন। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনা মহামারির কারণে আজকে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি ৩২ শতাংশ, আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যে ১০ শতাংশ। জ্বালানি মূল্যসফীতি যুক্তরাজ্যে ১০০ শতাংশের বেশি। সেই পরিস্থিতি কন্টিনেন্টাল ইউরোপীয় দেশগুলোতেও। আমাদের দেশের মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ, যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আমি মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপির অন্য নেতাদের অনুরোধ জানাব, পৃথিবীর দিকে চোখ মেলে তাকানোর জন্য। আর চোখ মেলে নিজেদের চেহারা একটু আয়নায় দেখার জন্য। কিভাবে তাদের সময়ে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল?
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বই পোড়ানো যেমন অপরাধ, বই না পড়াও অপরাধ। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই প্রদান প্রথা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চালু করেছেন। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রতিবছর ৩৫ কোটির বেশি বই বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল আর কোন দেশে এমন ব্যবস্থা চালু নেই, যেটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সরকার চালু করেছে।
তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে ২০১৪ সালে সেই নতুন বই সংরক্ষিত ছিল স্কুল ঘরে। সেই বইয়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। পাঁচশ স্কুল ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। নির্বাচন প্রতিহতের নামে এই কাজটি করেছে বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোট। শিক্ষার্থীদের বই নয় শুধু, তাদের ভবিষ্যৎ পুড়িয়ে দিয়েছে। সেই পোড়া বই বুকে জড়িয়ে ধরে শিক্ষার্থীরা আহাজারি করেছে। রাজনীতির নামে বই পোড়ানো এমন ঘটনা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে ঘটেছে কিনা সন্দেহ। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এমন সময় ছিল প্রতিবছর শিক্ষাবর্ষ যখন শুরু হতো তখন দরিদ্র ঘরের অভিভাবকরা অবস্থা–সম্পন্ন পরিবারের কাছে ধর্ণা দিতেন তার ছেলের পুরনো বইগুলো সংগ্রহ করার জন্য, এটিই ছিল নিয়মিত ঘটনা। সেই ঘটনা এখনো পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আছে। কিন্তু আমাদের দেশে জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান প্রথা চালু করেছেন।