পাঁচ মামলায় সাজার রায় মাথায় নিয়ে লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে ‘আলাপ–আলোচনা চলছে’ বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে আমরা ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করেছি। আলাপ–আলোচনা চলমান আছে। তিনি বলেন, আসলে আইন, আদালত কোনো কিছুর ওপর তাদের (বিএনপি) আস্থা নেই এবং কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। শুধু ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে যায়, আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, বিদেশিরা প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসে। খবর বিডিনিউজের।
ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার দায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
তারেক বিদেশে থাকা অবস্থায়ই এর আগে চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় আসে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে আগস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় তার। নতুন করে আরেক মামলায় সাজার রায় আসায় শুক্রবার সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
সে প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, এই মামলা কিন্তু আমাদের সরকার দায়ের করেনি। এই মামলা করেছে তাদের পছন্দের তত্ত্ববধায়ক সরকার ২০০৭ সালে।
কারণ ইয়াজ উদ্দিন সাহেব খালেদা জিয়ার দলের মানুষ ছিলেন, তাকে খালেদা জিয়া ও বিএনপিই রাষ্ট্রপতি বানিয়েছিলেন। ফখরুদ্দিন সাহেবকে ওয়াশিংটন থেকে ধরে এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছিল। সেই সরকার সেনা সমির্থিত ছিল। তখন যিনি সেনাপ্রধান ছিলেন, সাতজনকে ডিঙ্গিয়ে খালেদা জিয়া তাকে সেনাবাহিনীর প্রধান বানিয়েছিলেন। তাদের পছন্দের মানুষরাই যখন ক্ষমতায় তখনই এই মামলা দায়ের হয়েছিল। আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের ওপর প্রতিহিংসা পরায়ণ হলে দলের পক্ষ থেকেই মামলা করা হত বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
বিএনপিকে ‘নেতৃত্বশূন্য করতে’ নির্বাচনের আগে তারেক ও জোবাইদার সাজা দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ দলটির নেতারা করেছেন, সে বিষয়েও তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, সরকার যদি স্বঃপ্রণোদিত হয়ে কোনো কিছু করত, তাহলে এই মামলার রায় হওয়ার জন্য তো সাড়ে ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হত না। নির্বাচন তো এর আগেও দুটো হয়েছে, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন। এটার সঙ্গে নির্বাচনের তো কোনো সম্পর্ক নেই, আমাদের সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মোটেই করেনি। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার হয়েছে, বিচারের রায় হয়েছে।