কাজীর দেউড়ির সহিংসতা ও নিজ দলীয় নেত্রীর চাঁদাবাজির মামলায় দেড় মাস বন্দী থাকার পর অবশেষে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এর আগে দুপুর ২টার পর থেকে কারা ফটকের সামনে নেতাকর্মীরা তাঁর মুক্তির অপেক্ষা করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি কারা ফটক দিয়ে বের হলে নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তাঁর নামে স্লোগান দেন। তবে পুলিশী তৎপরতায় তিনি সেখানে বেশিক্ষণ থাকেননি। দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান আজাদীকে বলেন, আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র পৌঁছালে সেগুলো যাচাই বাছাই শেষে ডা. শাহাদাত হোসেনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ডা. শাহাদাত হোসেনের আইনজীবী মো. এনামুল হক আজাদীকে বলেন, কোতোয়ালী ও চকবাজার থানার মোট তিনটি মামলায় কারাগারে ছিলেন ডা. শাহাদাত হোসেন। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানার একটি মামলায় অনেক আগেই তিনি চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালত থেকে জামিন পান। চকবাজারের একটিসহ বাকি দুটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি ঈদের আগে জামিন পান। এরই ধরাবাহিকতায় বুধবার বিকালে তিনি চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, কাজীর দেউড়িতে গত ২৯ মার্চ বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হন। সহিংসতার এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটির বাদী নগর ট্রাফিক পুলিশের (দক্ষিণ বিভাগ) সার্জেন্ট মো. আমজাদ হোসেন। অপরটির বাদী কোতোয়ালী থানার সিআরবি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রবিউল ইসলাম।
সার্জেন্ট আমজাদ হোসেনের মামলায় (মামলা নম্বর ৯৬/৩/২১) ৫৮ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৮৬, ১৮৯, ৩০৭, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩ ধারা, বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩, ৪, ৫ ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এসআই রবিউল ইসলামের অপর মামলায় (মামলা নম্বর ৯৫/৩/২১) ৪৩ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৮৬, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩ ধারা ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ৬ (১) এর (ক) (আ) (ই) (উ) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
অপরদিকে গত ২৯ মার্চ সকালে চকবাজার থানায় ডা. শাহাদাত হোসেনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও অপহরণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন নগর বিএনপি নেত্রী ডা. লুসি খান। পরে পাঁচলাইশের ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে ব্যক্তিগত সহকারীসহ ডা. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। এরপর আদালতের নির্দেশে কোতোয়ালী থানার দুই মামলাতেও ডা. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।