বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এনইআইআর নীতিমালা রিভিউ করা হবে : খসরু

| সোমবার , ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই ‘ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার’ বা এনইআইআর নীতিমালা ‘পুনর্বিবেচনা’ করা হবে বলেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এই নীতিমালার আওতায় মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের বিরোধিতা করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ চলার মধ্যে গতকাল রোববার ঢাকায় এক আলোচনায় সভায় তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি আমাদের ক্ষমতায় নিয়ে আসে তবে ‘ডেফিনিটলি’ এনইআইআর নীতিমালাসহ যেসব নীতিমালা মুক্তবাজারের সঙ্গে সংঘর্ষিক সেগুলো ‘রিভিউ’ করা হবে। আমরা সব অংশীজনের সঙ্গে কথা বলব। তারপর সেই অনুযায়ী সেগুলো ‘রিভিউ’ করা হবে। সাবেক আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারের যেসব নীতিমালা মুক্তবাজার অর্থনীতির পরিপন্থি, সেগুলো আমরা অবশ্যই ‘রিভিউ’ করবো। আপনি একদিকে মুক্তবাজারের কথা বলবেন আরেক দিকে সরকার নিয়ন্ত্রিত বাজার তৈরি করবেন সেটা হবে না। খবর বিডিনিউজের। একটি হোটেলে ‘এনইআইআর: বাস্তবায়ন কাঠামো, জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক উদ্বেগ’ বিষয়ক এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল সেন্টার ফর টেকনোলোজি জার্নালিজম (সিটিজে) নামে একটি সংগঠন। ‘মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের’ ব্যানারে এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনসেট ব্যবসায়ীরা আগারগাঁও এলাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে সড়ক আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। আগামী ১৬ ডিসেম্বর দেশে কার্যকর হতে যাচ্ছে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্ট্রার বা এনইআইআর। মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর হওয়ার পর কেবল সরকার অনুমোদিত বৈধ হ্যান্ডসেটই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারবে। তবে ১৬ ডিসেম্বরের আগে নেটওয়ার্কে সচল থাকা কোনো হ্যান্ডসেটই বন্ধ করা হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। আলোচনা সভায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, যে পণ্য সবার দরকার সেটার দাম বেশি হতে হবে কেন? ৬৭ হাজার কোটি টাকা ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ করেছে তার ফল কী?

কর কমালে সরকার বেশি টাকা পায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি ট্যাক্স কমিয়ে দিলে সরকারের খাতে বেশি টাকা আসে। কারণ তখন এর পরিধি বেড়ে যায়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সকল ধরনের রপ্তানিকারকদের ‘বন্ডেড ওয়ারহাউজের’ সুবিধা দেওয়া হবে তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান তার সময়ে গার্মেন্টসকে যে সুবিধা দিয়েছিল, তার সুফল এখন বাংলাদেশ ভোগ করছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে যারা রপ্তানি করবেন, তাদের সকলকে ‘বন্ডেড ওয়্যারহাউজ’ সুবিধা ও ‘ব্যাক টু ব্যাক’ এলসির সুবিধা দেওয়া হবে। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিটিজেএর সভাপতি ও দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক হাসান জাকির।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর সেক্রেটারি ফয়সল আলিম, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর সভাপতি আমিনুল হাকিম, বেসিসের সহায়ক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান রাফায়েল কবীর, দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সায়েম ফারুকী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান।

চট্টগ্রামের মোবাইল ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান বলেন, এই এনইআইআর প্রকল্পে যারা মোবাইল আমদানি করতে চান তাদের জন্য অনেক রকমের শর্ত দেওয়া হয়েছে। ‘প্রথমত বলা হয়েছে, দেশে যে ব্রান্ডের মোবাইল উৎপাদন হবে সেই ব্রান্ডের ফোন আমদানি করা যাবে না। আমদানি করতে হলে দেশীয় উৎপাদনকারীর এনওসি লাগবে। দ্বিতীয়ত : মোবাইল আমদানি করতে হলে মোবাইল প্রস্তুতকারক মূল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিনামা বাংলাদেশ সরকারকে দাখিল করতে হবে। এখন অ্যাপেলের মত কোম্পানিগুলো শত শত হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী যারা দুই চার কোটি টাকার মাল আনে, তাদের সঙ্গে অ্যাপেল সরাসরি বসতে চাইবে না। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মাল নিয়ে আসে ডিলারদের কাছ থেকে।’ মোবাইল আমদানির প্রক্রিয়া সহজীকরণের দাবি জানান এই ব্যবসায়ী। পাশাপাশি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বাজারে ঢুকে পড়া ফোনগুলো বিক্রির জন্য ছয় মাসের ‘গ্রেস পিরিওড’ দেওয়ার দাবি করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে নৌবাহিনী
পরবর্তী নিবন্ধরহমানিয়া কুলিং কর্ণার ও কেন্ডিকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা