বিএনপির পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা হবে চট্টগ্রাম থেকেই

রোডমার্চ ঘিরে বেড়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনা

মোরশেদ তালুকদার | সোমবার , ২ অক্টোবর, ২০২৩ at ৪:২১ পূর্বাহ্ণ

এক দফা আন্দোলনের চলমান ধাপের শেষ কর্মসূচি বা রোডমার্চ ঘিরে চট্টগ্রামে চাঙ্গা হচ্ছে বিএনপি। এ কর্মসূচি ঘিরে চট্টগ্রামে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা ও লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণা চালাচ্ছে তারা। এজন্য সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে। রোডমার্চকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন রাজনৈতিক তৎপরতায় ব্যস্ত বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এমনকি দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা দলটির নেতাকর্মীরাও সক্রিয় হয়েছেন। একই চিত্র দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলায়।

জানা গেছে, কয়েক ধাপে চলে আসছে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি। চলমান ধাপে ১৫ দিনের কর্মসূচি শুরু হয় গত ১৯ সেপ্টেম্বর, যা শেষ হবে আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে। এদিকে কুমিল্লা থেকে রোডমার্চ শুরু হয়ে বিকাল ৩টায় নগরের কাজীর দেউড়ি মোড়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে তা। ওই সমাবেশ থেকে দলটির পরবর্তী ধাপের কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা। তাই চট্টগ্রামের সমাবেশটির আলাদা কদর রয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের কাছে।

এছাড়া আগামী মাসের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে আগেই। ওইদিক দিয়ে দাবি আদায়ে বিএনপির হাতে আছে চলতি অক্টোবর মাস। তাই এ মাসের কর্মসূচি হচ্ছে অনেকটা ‘শেষ চেষ্টা’ দলটির জন্য। তাই কর্মসূচি সফল করতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সক্রিয় হচ্ছে বলে বিএনপির একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার আজাদীকে বলেন, আমাদের চূড়ান্ত কর্মসূচি চলছে, তার অংশ হিসেবে এ রোডমার্চ। এখান থেকেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তাই রোডমার্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোডমার্চ সফল করতে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রস্তুতি সভা, লিফলেট বিতরণসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। আজ (গতকাল) আমাদের প্রস্তুতি সভা হওয়ার কথা ছিল পার্টি অফিসে, কিন্তু প্রতিটি উপজেলা থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এত নেতাকর্মী এসেছেন, এতে পার্টি অফিসের পুরো মাঠ ভরে গেছে।

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম আজাদীকে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা তো আন্দোলনের মধ্যেই আছেন। যতক্ষণ না সরকারের পতন হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তবে সাধারণ মানুষ বিএনপির আন্দোলনে বেশি উজ্জীবিত, কারণ তারাও মুক্তি চায়। তাই সাধারণ লোকজনও রোডমার্চে যোগ দেবে সেটা নিশ্চিত করে বলা যায়।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, আন্দোলনের সব দিক দিয়ে রোডমার্চ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যে প্রস্তুতি সভা এবং লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলছে সেখানে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত দেখা যাচ্ছে। মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনও প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাধারণ মানুষও আগ্রহী রোডমার্চ নিয়ে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ভোটাধিকার হারানোসহ নানা কারণে বিরক্ত সাধারণ মানুষ, তারাও আন্দোলনে অংশ নিতে প্রস্তুত।

রোডমার্চ উপলক্ষে গঠিত বন্দর থানা সমন্বয়ক কমিটির প্রধান এম এ আজিজকে আজাদীকে বলেন, নেতাকর্মীদের বেশ উজ্জীবিত দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন মতবিনিময় সভা হচ্ছে, এলাকার লোকজনও তাতে যোগ দিচ্ছে।

ডবলমুরিং থানা সমন্বয়ক কমিটির প্রধান এস এম সাইফুল আলম আজাদীকে বলেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব এসেছে।

এদিকে গতকাল নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় চিঠি দিয়ে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর জানিয়েছেন, আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় কাজীর দেউড়ি মোড়ে রোডমার্চ পরবর্তী সমাবেশ হবে। এর আগে রোডমার্চটি কুমিল্লা থেকে শুরু হয়ে ফেনী, মীরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম সিটি গেট, কর্নেলহাট, একে খান মোড়, ফয়’স লেক, জাকির হোসেন রোড, খুলশী থানার সামনে হয়ে জিইসি মোড় থেকে ওয়াসা মোড়, আলমাস সিনেমা হয়ে কাজীর দেউড়ি মোড়ে এসে পৌঁছবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা, চট্টগ্রামে সমাবেশ ২৮ অক্টোবর
পরবর্তী নিবন্ধএকজন বিয়ে করবে, একজন টেক্সি কিনবে, আরেকজন কিনবে জমি