ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের উপ–নির্বাচনে বিএনপির পদত্যাগী নেতা আব্দুস সাত্তার ভূঁঞা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিনভর ভোট শেষে রাতে এই উপ–নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন দুই উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস বাপ্পী এবং মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান। খবর বিডিনিউজের।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কলারছড়ি প্রতীকে উকিল আব্দুস সাত্তার পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাষানী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন নয় হাজার ৬৩৫ ভোট। বিএনপির সাবেক নেতা ও নিখোঁজ আবু আসিফ আহমেদ মোটরগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ২৬৯ ভোট। জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৮১৮ ভোট।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ১১ ডিসেম্বর বিএনপির অন্য সংসদ সদস্যদের মত সাত্তারও পদত্যাগ করেন। তবে ফাঁকা আসনে উপনির্বাচনে দাঁড়াতে দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন তিনি। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশে বিএনপির সংসদ সদস্যরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন তারা সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। আওয়ামী লীগ ভোটে অংশ না নিলেও নেতাকর্মীরা সমর্থন দিয়েছেন পাঁচবারের এমপি উকিল সাত্তারকে। উকিল সাত্তার উপ–নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তা নিয়ে সরাইল ও আশুগঞ্জে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। এই মধ্যেই প্রতীক বরাদ্দের আগের দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন এবং স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু একসঙ্গে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোয় সেই গুঞ্জন আরও জোর পায়।
তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফলে নিজের ছেড়ে দেওয়া আসনের এই উপ–নির্বাচনে বিএনপির সাবেক নেতা ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁঞা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সহজেই উৎরে যাবেন বলে ভোটাররা আলোচনা করছিলেন। তারপর উপ–নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে প্রচার চালিয়েও ভোটের মাঠ থেকে সরে যান দুই বারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা। জাতীয় পার্টির সাবেক এই নেতা এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
এসব ঘটনা পরম্পরার মধ্যেই সবশেষ গত ২৭ জানুয়ারি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির সাবেক নেতা আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ আছেন বলে দাবি করে পরিবার। আসিফের সন্ধান ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়ে মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন তার স্ত্রী মেহেরুন নিছা। তবে ভোটের দিনও তার দেখা মেলেনি।