নগরের সাগরিকা মোড় থেকে নয়া বাজার মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এতে ৮টি থানার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। দলটির সিনিয়র নেতাদের দাবি, সাধারণ মানুষও এতে যোগ দিয়েছেন।
‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে’ আয়োজিত পদযাত্রার শুরুতে সাগরিকা মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে মানুষের জোয়ার এসেছে। তা দেখে অসহায় হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামী লীগ পুলিশের পিছে পিছে ঘুরছে আর ছুরি, লাঠি, দা নিয়ে তারা শান্তি সমাবেশ করছে। ওরা নাকি আবার জনগণের সম্পদ রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে কবরে চলে গেছে। নতুন করে তাদের আর কবরে নেয়ার দরকার নেই। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ কবরে সমাহিত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আজকের পদযাত্রা থেকে মানুষ সরকারকে বার্তা দিয়েছে, শেখ হাসিনা বিদায় হও। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শেখ হাসিনা বিদায় হও। এই বার্তা যদি ফ্যাসিস্ট, দখলদার, অবৈধ সরকার বুঝতে না পারে তাহলে তাদের জন্য আরও বড় দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। খসরু বলেন, তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। রাজপথে জনগণকে নিয়ে এ সরকারকে হটাতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সবাই প্রস্তুত হোন। শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে এবং লড়তে হবে। আমরা প্রয়োজনে প্রতিরোধ করব। জীবন দিয়ে হলেও এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব। জীবন দিয়ে হলেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। দুর্নীতিবাজদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করব।
তিনি বলেন, বীর চট্টলার জনগণ আজ জেগে উঠেছে। সারা বাংলাদেশের জনগণ আজ জেগে উঠেছে। পুলিশি তৎপরতা, গ্রেপ্তার, খুন, মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা, গুম, নির্যাতন করে বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। যত বেশি হামলা হবে, যত বেশি গ্রেপ্তার করা হবে, তত বেশি আন্দোলন জোরদার হবে। বেশি হামলা করলে, বেশি মামলা করলে বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। বাড়াবাড়ি বেশি করলে দেশের মানুষও তাড়াতাড়ি তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে। ইতোমধ্যে দেশের মানুষ পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে, এই অবৈধ, দখলদার, ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় হও।
নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী ও বিএনপি নেতা মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। সমাবেশ শেষে সাগরিকা মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করে পোর্ট কানেকটিং রোড, সরাইপাড়া মোড় হয়ে নয়া বাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। আকবরশাহ, পাহাড়তলী, হালিশহর, খুলশী, ডবলমুরিং, বন্দর, পতেঙ্গা, ইপিজেড থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন।
সমাবেশে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা বলতে চাই, এখনো সময় আছে, শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে ভালোয় ভালোয় কেটে পড়েন। না হলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।
এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করব।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, কাউন্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আসল চেহারা উন্মোচিত হয়েছে।
আবু সুফিয়ান বলেন, কোনো ধরনের ভয় ভীতি দেখিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না।
পদযাত্রা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, আবদুল মান্নান, হারুন জামান, অ্যাডভোকেট মুফিজুল হক ভূঁইয়া, এস এম আবুল ফয়েজ, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মোহাম্মদ শাহেদ, এইচ এম রাশেদ খান, মনোয়ারা বেগম মনি, জেলী চৌধুরী, নুরুল্লাহ বাহার, হাজী বাবুল হক, মোশারফ হোসেন ঢেপটী, আবদুস সাত্তার সেলিম, মো. সেকান্দর, হাজী হানিফ সওদাগর, ডা. নুরুল আবছার, জাহিদ হাসান, মো. শাহাবুদ্দীন, হাজী বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন জিয়া, মাঈনুউদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সাইফুর রহমান শপথ, তাহের আহম্মেদ, মো. আলমগীর, কামাল পাশা নিজামী, মনিরুজ্জামান মুরাদ, মুছা বাবলু, মামুনুর রশীদ শিপন, সাইফুল আলম ও শরিফুল ইসলাম তুহিন।