ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) অনলাইন সেবা। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে চলমান বিশেষ সেবা সপ্তাহে অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশনে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। এতে করে করোনাকালীন সময়ে অফিসে ভীড় অনেকাংশে কমে গেছে। বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বিশেষ সেবা সপ্তাহ পালন করছে বিআরটিএ। সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে অনলাইনে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন প্রদানসহ কয়েকটি ঝটপট সেবা দেওয়া হচ্ছে। ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সেবা সপ্তাহ চলবে।
সূত্রে জানা গেছে, সেবা সপ্তাহ ছাড়াও সেবা গ্রহীতারা অনলাইনে শিক্ষানবিক ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ঘরে বসেই আবেদন দাখিল এবং ঘরে বসেই শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্ট নিতে পারবেন। অনলাইনে হাই সিকিউরিটি স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনও করতে পারবেন। তাছাড়া নতুন মোটর সাইকেল কিনলে সংশ্লিষ্ট শোরুমের মাধ্যমে অনলাইনে মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের আবেদনও দাখিল করতে পারবেন। একই সাথে রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেটের জন্য ঘরে বসেই আবেদন দাখিল এবং উক্ত সার্টিফিকেট প্রিন্ট পেতে পরেন। একইভাবে রাইডশেয়ারিং মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেটের জন্য ঘরে বসেই আবেদন এবং সার্টিফিকেট প্রিন্ট পেতে পারছেন সেবাগ্রহীতারা। অন্যদিকে মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমেও কয়েকটি সেবা মিলছে। তন্মধ্যে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বায়োমেট্রিক প্রদানের অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রাপ্তি, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রিন্টিং স্ট্যাটাস জানা ও সংগ্রহের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া, মোটরযানের রেট্রো-রিফ্লেক্টিব নাম্বারপ্লেট ও আরএফআইডি ট্যাগ প্রস্তুতের স্ট্যাটাস জানা এবং ট্যাগ সংযোজনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া এবং স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রিন্টিং স্ট্যাটাস জানা যায়। এজন্য নির্ধারিত অপসনে ম্যাসেজ পাঠাতে হয়। তাছাড়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও সেবা মিলছে। তন্মধ্যে ভিসা, মাস্টার কার্ড, ডিভিভিএল, আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড, রকেট ও বিকাশের মাধ্যমে মোটরযানের কর ও ফি জমা দেওয়া যায়। তাছাড়া দেশের ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৪শটির মতো শাখায় ট্যাক্স টোকেন নবায়ন ও অগ্রিম আয়করসহ অন্যান্য ফি প্রদান করা যায়। চট্টগ্রাম বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে গত তিন দিনে প্রায় ৮শ আবেদন এসেছে অনলাইনে। তন্মধ্যে সোমবার ২৫০টি, মঙ্গলবার ২৩০টি, বুধবার ৩০০টি আবেদন জমা হয় অনলাইনে। এ তিনদিনে সরাসরি আবেদন জমা পড়েছে মাত্র ২১টি। তন্মধ্যে সোমবার ৭টি, মঙ্গলবার ১০টি এবং বুধবার ৪টি। অন্যদিকে গত তিনদিনে অনলাইনে মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশনের আবেদন হয়েছে ১৭২টি। সরাসরি কোন আবেদন আসেনি এ তিনদিনে। তন্মধ্যে সোমবার ৩৫টি, মঙ্গলবার ৬৭টি এবং বুধবার ৭০টি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের আবেদন জমা পড়েছে অনলাইনে।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেলের সহকারি পরিচালক তৌহিদুল আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, এখন মানুষ সচেতন হচ্ছে। ঘরে বসে সেবা পেলে কেন কষ্ট করে অফিসে আসবে। মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন সেবা পাওয়া যাচ্ছে। এখন দূর দূরান্তের মানুষের জন্য উপকার হয়েছে বেশি।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিআরটিএ’র বিশেষ সেবা সপ্তাহে চট্টগ্রামেও অনলাইনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা অফিসে ডেস্ক খুলেছি সরাসরি নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যুর জন্য। কিন্তু লোকজন এখন অনলাইনে আবেদন করছে। অফিসে আসছে না। গত তিনদিনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে যেখানে ৮শ আবেদন পড়েছে, সেখানে আমাদের অফিসের ডেস্কে সরাসরি লাইসেন্সের জন্য এসেছে মাত্র ২১জন মানুষ। এটি খুবই ইতিবাচক। মানুষ ঘরে বসে বিআরটিএ’র সেবা পাচ্ছে এটা কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের জন্য আনন্দেরও।