চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের পর এবার বিআইটিআইডি ল্যাবেও যক্ষ্মার মেশিনে (জিন এক্সপার্ট মেশিনে) করোনা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই এই কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছেন বিআইটিআইডি ল্যাব প্রধান ডা. শাকিল আহমেদ। যক্ষ্মার মেশিনে করোনা পরীক্ষার সুবিধা বিষয়ে ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, এ মেশিনে পৃথকভাবে একটি একটি করে নমুনা পরীক্ষা করা যায় এবং ২ ঘণ্টার মধ্যেই এর রেজাল্ট জানা যায়। কিন্তু আরটিপিসিআর মেশিনে লটের মাধ্যমে (একসাথে ৯০-৯৫টি) নমুনা পরীক্ষা করতে হয়। আলাদা করে একটি একটি নমুনা পরীক্ষার সুবিধা নেই।
খুব জটিল কোনো রোগীর জরুরি ভিত্তিতে নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন পড়লে সেক্ষেত্রে জিন এক্সপার্ট মেশিনে পরীক্ষাটি করা যাবে। এতে করে স্বল্প সময়ে ফল পাওয়া যাবে। মূলত এ ধরনের জরুরি পরিস্থিতির জন্যই এই (জিন এক্সপার্ট) মেশিনে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।
বিআইটিআইডি ল্যাব সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে থেকেই একটি জিন এক্সপার্ট মেশিন রয়েছে এই ল্যাবে। এই মেশিনের মাধ্যমে মূলত যক্ষ্মার কফ পরীক্ষা করা হয়। তবে এবার করোনা পরীক্ষা করা হবে এই মেশিনে। করোনা পরীক্ষার জন্য এরই মধ্যে রি-এজেন্টসহ কিটও পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডিরেক্টর (টিবিএল এন্ড এএসপি) অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম বিআইটিআইডি ল্যাব পরিদর্শনে আসেন। এসময় জিন এক্সপার্ট মেশিনে করোনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব প্রধানের হাতে কিট হস্তান্তর করেন তিনি। জিন এক্সপার্ট মেশিনে সবমিলিয়ে ৫০০টি নমুনা পরীক্ষার রি-এজেন্ট ও কিট পাওয়া গেছে বলে জানান ল্যাব প্রধান ডা. শাকিল আহমেদ।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রফেসর ডা. আবুল বাসার মো. খুরশীদ আলম। জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিউবারকুলোসিস রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) এই জিন এক্সপার্ট মেশিনে করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ১২ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হলেও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে মেশিনটির মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা চালু হয় ২৮ সেপ্টেম্বর। এই মেশিনে কম সময়ে ফল জানার সুবিধার পাশাপাশি সঠিকতার হারও বেশি বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। যদিও এই মেশিনে পরীক্ষাকৃত নমুনার মধ্যে পজেটিভ শনাক্তের হার তুলনামূলক বেশি। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চালুর পর থেকে ৪০ শতাংশের বেশি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে এই মেশিনে। অথচ একই সময়ে বিআইটিআইডি ও চমেক ল্যাবে আরটিপিসিআর মেশিনে করোনা শনাক্তের হার ৯ শতাংশের কম। অবশ্য জেনারেল হাসপাতালের ওই ল্যাবে অধিকাংশই হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার কারণে এখানে করোনা শনাক্তের হারও একটু বেশি বলে মনে করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।