বায়েজিদে ‘বড় পাহাড়ে’ বড় কলোনি

পাহাড় এখন টিলা, শত শত ঘর

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ

একটু একটু করে কাটতে কাটতে এক সময়ের সবুজ পাহাড় পরিণত হলো টিলায়। আর সেই টিলার চারদিকে গড়ে উঠেছে অসংখ্য কলোনি। সেখানে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে শত শত পরিবার। নগরীর বায়েজিদের ‘বড় পাহাড়’ খ্যাত বাংলাবাজার ব্যাংক পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসের এ চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বড় পাহাড় কেটে দীর্ঘদিন ধরে এসব কলোনি তৈরি করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা জুনাব আলী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বায়েজিদ বোস্তামী বাংলাবাজার মোড় থেকে পাহাড়ের উপরের দিকে সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে ‘গুলশান আবাসিক’। এই আবাসিকে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন। নতুন করে নির্মিত হচ্ছে আরো কয়েকটি বহুতল ভবন। গুলশান ভবনের পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাহাড়ের পাদদেশে রয়েছে বেশ কয়েকটি কলোনি। সরকারি পাহাড়টি দখল করে উপরের অংশেও স্থাপনা তৈরি করেছে অনেকে। কলোনির বাসাগুলোতে রয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ। নাগরিক এসব সুবিধা বিদ্যমান থাকায় এসব কলোনিতে শত শত পরিবার বসবাস করছে। নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার সুবাদে কলকারখানার শ্রমিকরা এখানকার কলোনিতে বসবাস করে। যে কারণে কলোনিগুলোর কদর রয়েছে। বড় বড় শিল্পগ্রুপও পাহাড়টির পাদদেশের প্লটের মালিক বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব আবদুল করিম বলেন, এখানে জুনাব আলী সাহেবের বেশ কয়েকটি কলোনি আছে। বড় পাহাড়ের উপরে নিচের কলোনিতে কয়েকশ ঘর রয়েছে। অনেক আগে থেকে ধীরে ধীরে পাহাড় কেটে সমতল বানিয়ে টিনশেড কলোনিগুলো বানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জুনাব আলী বলেন, গুলশান সোসাইটিতে ২০ কানি জায়গা। সোসাইটিতে ৫০ জনের মতো ভূমি মালিক রয়েছে। এখানে কোনো পাহাড় নেই। আমাদের পরে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাহাড়। আমি যে জায়গাটি খরিদ করেছি সেগুলো ৮০ সালের আগে থেকে বিএস খতিয়ান করা। বিএস খতিয়ানে জমির শ্রেণি ‘খিলা’ হিসেবে আছে। আমার একটি কলোনিতে ৩০টি ঘর রয়েছে। এগুলো টিনের কাঁচা ঘর।
তিনি বলেন, আমি এই ওয়ার্ডে দুইবার কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছি। এতে আমার কিছু শত্রু তৈরি হয়েছে। এখানে টাউট শ্রেণির কিছু মানুষ আমাকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। আমার ওখানে কোনো পাহাড় নেই, আমি পাহাড় কাটিওনি। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক (সরকারের যুগ্ম সচিব) মো. নূরুল্লাহ নূরী আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক সময় অসংখ্য সবুজ পাহাড় ছিল। প্রভাবশালীদের কুনজর পড়ার কারণে দীর্ঘসময় ধরে অসংখ্য পাহাড় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এখনো যতটুকু পাহাড় আছে, সেগুলোতে বসতি নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে। প্রতিযোগিতা দিয়ে পাহাড়ও কাটা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাহাড় কাটা কিংবা দখলকারীদের পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো ছাড় দেবে না। বায়েজিদের ব্যাংক কলোনি পাহাড়েও এনফোর্সমেন্ট পরিচালনা করে দখলকারী ও কর্তনকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আয়কর আদায় ছাড়াল লক্ষ্যমাত্রা
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা