দেশে বায়ু দূষণের প্রভাবে ২০১৯ সালে অন্তত ৭৮ হাজার ১৪৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং জিডিপির ৩ দশমিক ৯ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে বলে এক প্রতিবেদন জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। গতকাল রোববার ঢাকার একটি হোটেলে ‘ব্রিদিং হেভি : নিউ এভিডেন্স অন এয়ার পলিউশন অ্যান্ড হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, বায়ু দূষণের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে দূষিত বিভাগ ঢাকা।
বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প ও ব্যাপক যানবাহনের কারণে এই দূষণ হচ্ছে। সেইসঙ্গে ঢাকার আশেপাশের ইটভাটার ধোঁয়া দূষণ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, শ্বাসনালীর সংক্রমণ ও হৃদযন্ত্রের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি মানুষের বিষণ্নতাও বাড়ছে। খবর বিডিনিউজের।
মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বায়ু দূষণের প্রভাব অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় অনেক বেশি নির্মাণ কাজ ও যানবাহন চলাচল করে যেসব এলাকায়, সেখানে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি। ঢাকার আশপাশে ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় তা গড়ে ১৩৬ শতাংশ বেশি।
এমনকি দেশে সবচেয়ে কম দূষণের এলাকা সিলেটেও পিএম ২.৫-এর মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপদ সীমার চেয়েও ৮০ শতাংশ বেশি। দেশের পূর্বাঞ্চল, অর্থাৎ চট্টগ্রাম-সিলেটের চেয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও রাজশাহীতে বায়ু দূষণ বেশি। বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণা বলছে, বায়ু দূষণের ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক এবং ডায়াবেটিস, হার্ট বা শ্বাসযন্ত্রের রোগীদের ওপর। দূষণের প্রভাব পড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও।
বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫) এক শতাংশ বাড়লে তা মানুষের বিষণ্নতার সম্ভাব্য ঝুঁকি ২০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। প্রতিবেদনে বায়ু দূষণের প্রভাব কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া, জনস্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন, বায়ু দূষণ ডেটা পর্যবেক্ষণ, পূর্ব সতর্কতা এবং আরও গবেষণার সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন বলেন, বায়ুদূষণ শিশু থেকে বয়স্ক সব মানুষের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করছে।