বাড়ির দেয়াল ভেঙে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গেছে অস্ত্রধারীরা

টেকনাফে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ২২ নভেম্বর, ২০২৫ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের টেকনাফে সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের একটি দল স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে দেয়াল ভেঙে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় বাড়ির মালিক নুরুল ইসলামকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম লেদা গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, রাতে হঠাৎ প্রায় অস্ত্রধারী ৩০ জনের একটি রোহিঙ্গা দল নুরুল ইসলামের বাড়ি ঘিরে ফেলে। বাড়ির দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে তারা প্রথমে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে দরজা ভাঙতে না পেরে হাতুড়ি ও হাম্বার দিয়ে দেয়ালে আঘাত করতে থাকে। এরপর বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব, ভাঙচুর করে। যাওয়ার সময় গৃহকর্তা নুরুল ইসলামকে অপহরণ এবং বাড়ির জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

ঘটনার খবর পেয়ে টেকনাফ ১৬ এপিবিএনএর আওতাধীন লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম রাজু ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায় ৬১ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেন।

নুরুল ইসলামের ছেলে কামাল হোসেন বলেন, হঠাৎ একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আমাদের ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে আধুনিক ভারী অস্ত্র ছিল। আব্বু অনিরাপদ মনে করে একটি কক্ষে লুকিয়ে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা দরজা ভাঙতে না পেরে দেয়াল গুঁড়িয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার আগে তাকে নির্মমভাবে মারধরও করেছে। তিনি আরও বলেন, বাড়ির অন্য সদস্যদের ওপরও হামলা হয়েছে। ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে তারা। বাইরে গুলির শব্দ আর তাদের অস্ত্র দেখে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস করেনি।

এপিবিএন পরিদর্শক রাজু বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কাছের পাহাড়ি এলাকায় কয়েকটি সশস্ত্র ডাকাত গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তাদের কেউ নুরুল ইসলামকে অপহরণ করেছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

হামলার পর থেকে পুরো লেদা এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক বছরে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপগুলোর বেপরোয়া দাপটে সীমান্তাঞ্চল ক্রমেই অরক্ষিত হয়ে পড়ছে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, সংঘটিত ঘটনার পর থেকে জড়িত সন্ত্রাসীদের ধরতে এবং অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করার জন্য গভীর রাত থেকে এপিবিএন ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি টাকায় ১০ মাসে দুইবার পিকনিক, প্রশ্ন ক্ষোভ
পরবর্তী নিবন্ধমুছে গেছে রাম্বল স্ট্রিপের সাদা রং, ঘটছে দুর্ঘটনা