বাড়তি দুর্ভোগ ফেরি সার্ভিসে

শুরুর দিন থেকেই কোমর পানিতে ডুবে রয়েছে অ্যাপ্রোচ সড়ক তীব্র জোয়ার ও ভারী বর্ষণে বন্ধ থাকে ফেরি চলাচল শত শত যাত্রী বাধ্য হয়ে পারাপার করছেন ইঞ্জিন চালিত নৌকায়

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৪ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

একমুখী সেতু দিয়ে পারাপারে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহানোর পর এবার বোয়ালখালীবাসীর ভাগ্যে বাড়তি দুর্ভোগ যুক্ত হয়েছে ফেরি সার্ভিস চালুর পর। এতদিন কর্ণফুলী নদীর ওপর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত একমুখী রেল সেতু দিয়ে শত দুর্ভোগ মাড়িয়ে বোয়ালখালীবাসীকে শহরে আসতে হতো। গত ১ আগস্ট ফেরি সার্ভিস চালুর প্রথমদিনে এই দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। ফেরি চালুর প্রথম দিনেই কোমর সমান পানিতে ডুবে যায় অ্যাপ্রোচ সড়ক। শত শত মোটর সাইকেল, সিএনজি, ম্যাক্সিমা পানিতে ডুবে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গত তিনদিনই তীব্র জোয়ারে ফেরিতে ওঠার জন্য নির্মিত অ্যাপ্রোচ সড়কটি কখনো হাঁটু সমান, কখনো কোমর সমান পানিতে ডুবে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কালুরঘাট ফেরি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগের চিত্র। শত শত মোটর সাইকেল ফেরি থেকে নেমে কোমর সমান পানি মাড়িয়ে পাড়ে উঠছে। অনেক মোটরসাইকেলকে পেছনে একজন ঠেলতে দেখা গেছে। পুরো এলাকা কাদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের দুর্ভোগ বর্ণনাতীত। ফেরি থেকে নেমে গাড়িগুলো অ্যাপ্রোচ সড়কে নামার সময় কাত হয়ে যায়। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। টোল দিতে গিয়ে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাচ্ছে। এতে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যাচ্ছে। গাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় নষ্ট হচ্ছে যাত্রীদের।

তীব্র জোয়ার এবং ভারী বর্ষণে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল বলে জানান দুইপাড়ের যাত্রীরা। বোয়ালখালী থেকে প্রতিদিনের শহরের যাত্রী মুজাহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফেরিতে উঠতে গেলেই পরনের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। তাই এখন বাধ্য হয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পার হচ্ছি। সড়ক ও জনপথ ফেরির অ্যাপ্রোচ সড়কটি নির্মাণের সময় একেবারে নিম্নমানের কাজ করেছে। আমার মতো শত শত যাত্রীকে বাধ্য হয়ে এখন নৌকায় পারাপার করতে হচ্ছে। জোয়ারে ফেরি বন্ধ থাকলে প্রতিদিনের হাজার হাজার যাত্রী কিভাবে শহরে আসাযাওয়া করবে এই বিষয়গুলো কেউ দেখার নেই। একটি সেতুর জন্য আমরা বোয়ালখালীবাসীর এতো বছরের দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না।

উন্নয়নকর্মী চম্পা দাশ বলেন, আমরা নারীরা এতো পানির মধ্যে কিভাবে ফেরিতে উঠব দেখেন! ফেরিতে উঠতে গিয়ে কাপড় ভিজে যাচ্ছে। ভেজা কাপড়ে কিভাবে অফিসে এবং স্কুলকলেজে যাবে এপারের মানুষ! অ্যাপ্রোচ সড়কটি নির্মাণের সময় বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত ছিল।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বড় ধরনের সংস্কার কাজে গত ১ আগস্ট থেকে তিনমাসের জন্য বন্ধ করা হয়েছে জরাজীর্ণ শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু। সংস্কার কাজের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকাবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী। তবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সেতুর উপর দিয়ে যাওয়া ট্রেন লাইনসহ সেতুর ডেকিং, পাটাতন মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ১৫ সেপ্টেম্বরের পর এই সেতুর উপর দিয়ে পর্যটন নগরী কঙবাজার রুটে ট্রেন চলাচল করবে। তাই রেল কর্তৃপক্ষ জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজ শুরু করেছে। সংস্কার কাজের জন্য সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিচে নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কিন্তু ফেরিতে দুই পারের যাত্রীদের প্রতিদিন সীমাহীন দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি পদে ফজলুল্লাহ সপ্তম বার
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায়, তা বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে : ভারত