ঈদ সামনে রেখে নগরীতে মাদকের মজুদ বাড়ছে। ফেনসিডিল, গাঁজা ও ইয়াবা, আইসসহ প্রায় ২৫ প্রকারের মাদক সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। মাদক চোরাকারবারিদের প্রধান টার্গেট রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। নগরীর বিভিন্ন বস্তি এবং অভিজাত এলাকায় সক্রিয় মাদক কারবারীরা মজুদ বাড়াচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের কর্মকর্তারা দাবি করে বলেছেন, ঈদের পরে মাদকের সরবরাহ বাড়ার আশঙ্কায় তারা এখন থেকে নজরদারি বাড়িয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেওয়া তথ্য মতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কেনাবেচা হলেও এর মূল বাজার হলো বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকা। সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশের পর এ সব মাদক ৬টি রুট দিয়ে চট্টগ্রামে আনা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী দেশ থেকে ফেনসিডিল, গাঁজা ও ইয়াবাসহ প্রায় ২৫ প্রকার মাদক দেশে আসছে।
এর মধ্যে ইয়াবা, ম্যান্ডেলা মদ, ম্যান্ডেলা বিয়ার, হিরো হুইস্কি, গ্রান্ড রয়েল হুইস্কি, লন্ডন রাম, টাইগার রাম, ম্যান্ডেলা রাম, আন্দামান গোল্ড বিয়ার, রয়েল ডিস্টিলারি, বস আপ, রেড হর্স ডিস্টিলারি, জিনস মদ, অরেঞ্জ মদ ও বাংলা মদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তথ্য মতে, ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তের ১৫৩টি এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য ঢুকছে। সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীদের একাধিক হাত ঘুরে এই মাদক সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে রাজধানীতে আসে। ইয়াবা আসছে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে।
রোহিঙ্গারা টেকনাফের সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান কক্সবাজার নিয়ে আসে। এরপর সড়ক পথে তা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় যায়। এ ছাড়া ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল এবং গাঁজা আসছে। ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে করে গাঁজা ও ফেনসিডিল ঢুকছে। হেরোইন আসছে যশোর সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী যানে। ফেনসিডিল আসছে পণ্যবাহী ট্রাকে, কুমিল্লা ও আখাউড়া সীমান্ত থেকে, গাঁজা আসছে প্রাইভেটকার ও যাত্রীবাহী বাসে। সীমান্ত থেকে বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও রেলপথেও মাদকদ্রব্য আসছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআরটিসি এলাকার এক নারী মাদক ব্যবসায়ী আজাদীকে বলেন, ঈদে এবং ঈদের পরে চাহিদা বাড়বে তাই বেশি করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এই এলাকায় সব ধরনের মাদক পাওয়া যায়। তিনি নিজে গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবা বিক্রি করে থাকেন বলে জানান। তার দেওয়া তথ্য মতে, নগরীর প্রত্যেকটি বস্তি ছাড়াও অভিজাত এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী মাদকের মজুদ বাড়াচ্ছে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল কবীর আজাদীকে জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স সবসময়। তবে ঈদ উপলক্ষে মাদকের মজুদ বাড়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। এটা আঁচ করতে পেরে ঈদের পনের দিন আগে থেকেই আমরা স্পেশাল ড্রাইভ দিচ্ছি বিভিন্ন এলাকায়। আমাদের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, র্যাব এবং ডিবির টিম মাঠে সক্রিয় আছে। তবে এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।












