বাড়ছে মাচায় তরমুজ চাষ

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া | রবিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৫ at ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় উপজেলার উত্তর পোমরা গ্রামের হাজারিখীল গ্রামে আট শতক জমিতে গত বছর মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজের আবাদ করেছিলেন সাইফুল ইসলাম। মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে আয় করেছিলেন প্রায় দুই লাখ টাকা। এতে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়ে আবারও দশ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছেন। এবারো ভালো ফলন পেতে শুরু করেছেন এবং বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। সাইফুলের দেখাদেখিতে একই প্রক্রিয়ায় আরও বেশ কিছু কৃষক এই পদ্ধতিতে তরমুজ আবাদ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অসময়ে কীভাবে তরমুজের চাষ করা যায় সেটি দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন অনেক কৃষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাচায় দুলছে সারি সারি তরমুজ। প্রতিটি তরমুজকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ঝুড়িতে করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। দেখতে অনেকটা মনোরম দেখাচ্ছিল। এ সময় কথা হয় কৃষক মো. সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, প্রথমবার চাষে সফল হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এবারও গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষাবাদ করেছেন। এবার তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। প্রথমদিকে তরমুজ লাগানোর সময় আবহাওয়া খুব ভালো ছিল। কিন্তু যখন তরমুজ ধরতে শুরু করেছে তখন বিরূপ আবহাওয়া বিরাজমান ছিল এবং রোগের প্রাদুর্ভাবও কিছুটা বাড়তি ছিল। তারপরও যে ফলন হয়েছে তাতে তার খরচ মিটিয়ে আরো লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার মত তরমুজ বিক্রি করেছেন এবং তার চাষকৃত জমিতে প্রতিদিন অনেকে দেখতে আসেন। সবাই একযোগে এই চাষে এগিয়ে এলে সবাই লাভবান হবেন এবং সমগ্র রাঙ্গুনিয়ায় তরমুজের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।

নতুন উদ্যোমী কৃষকদের পরামর্শ জানিয়ে তিনি আরও জানান, গ্রামের উদীয়মান যুবকরা যখন পরামর্শ চান তখন চাষাবাদ পদ্ধতি তাদেরকে শিখিয়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, উপসহকারী কৃষি অফিসার উত্তম কুমার শীল তাকে প্রথম গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। প্রথমবার চাষাবাদেও লাভবান হয়েছিলেন এবং এবারও তিনি লাভবান হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল বলেন, সাইফুল ইসলাম একজন তরুণ উদ্যোক্তা। গতবারও আমার পরামর্শে উনি তরমুজ চাষ করেছেন এবং বেশ লাভবান হয়েছেন। এবারও লাভবান হচ্ছেন। ওনার দেখাদেখি এলাকায় অন্যান্য উদীয়মান যুবকরা সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষকরা আগ্রহ প্রকাশ করছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষাবাদ করার জন্য। তাদেরও সর্বাত্মক সহায়তা করবো আমরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, আমি মনে করি এটিই আমাদের কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের সফলতা। আমি গ্রামীণ যুবক ভাইদেরকে আহ্বান জানাবোসাইফুলের মত যেন এ ধরনের আয়বর্ধক নতুন নতুন লাভজনক ফসল চাষাবাদে এগিয়ে আসেন। আগ্রহীদের কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে টেকনিক্যালি সকল ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবর্ণিল পদ্মের রাজ্য
পরবর্তী নিবন্ধগাড়ি চাপায় মোটর সাইকেল আরোহীর মৃত্যু