বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ফের বাড়ছে চট্টগ্রামে। আর বিদেশগামীদের কারণে বাড়তে শুরু করেছে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও। কঠোর লকডাউনের আওতায় ১৪ এপ্রিল থেকে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণায় বিদেশ যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষাও থমকে যায়। অনেকটা শূন্যের কোটায় চলে আসে। এর প্রভাব পড়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাতেও। বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দৈনিক নমুনা পরীক্ষার মোট সংখ্যা হঠাৎ অর্ধেকে নেমে আসে। তবে গত ১৭ এপ্রিল সৌদিআরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরসহ ৫টি দেশে যাতায়াতের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি দেয় সরকার। এই বিশেষ ফ্লাইট চলাচল শুরুর পর থেকেই বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে বাড়ছে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও।
এদিকে, গতকাল আরো দুটি দেশে যাতায়াতে বিশেষ বিমান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কুয়েত ও বাহরাইনে এ বিশেষ বিমান চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এতে বিদেশগামীর সংখ্যা আরো বাড়বে, আর বিদেশগামীর সংখ্যা বাড়ার প্রেক্ষিতে মোট নমুনার সংখ্যাও আরো বাড়তে পারে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও ল্যাব সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী- ১২ এপ্রিল ৬০৭ জন বিদেশগামী যাত্রীর নমুনা পরীক্ষা হয় চট্টগ্রামে। কিন্তু ১৪ এপ্রিল থেকে বিমান চলাচল বন্ধের ঘোষণায় একদিনের ব্যবধানে বিদেশগামী নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা একশর নিচে নেমে আসে। ১৩ এপ্রিল মাত্র ৫৫ জন বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষা হয়। ১৪ এপ্রিল পরীক্ষা হয় মাত্র চার জন বিদেশগামীর। বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষা থমকে যাওয়ায় কমে যায় মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বলছে- ১২ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত গড়ে দৈনিক আড়াই হাজার (বিদেশগামীসহ) নমুনা পরীক্ষা হতো চট্টগ্রামে। সেখানে একদিনের ব্যবধানেই নমুনার সংখ্যা কমে প্রায় অর্ধেকে নামে ১৪ এপ্রিল। ওইদিন (১৪ এপ্রিল) সবমিলিয়ে মাত্র ১ হাজার ৪৪২টি নমুনা পরীক্ষা হয় চট্টগ্রামে। যা আগের দিনগুলোর গড় নমুনা সংখ্যার প্রায় অর্ধেক। ধারাবাহিকতায় ১৫ এপ্রিল ১ হাজার ১৪২টি, ১৬ এপ্রিল ১ হাজার ২৬টি এবং ১৭ এপ্রিল একদিনে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৯৫৮টিতে নেমে আসে। তবে গত কয়েকদিন থেকে দৈনিক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আবারো বাড়তে শুরু করেছে চট্টগ্রামে। সর্বশেষ ২২ এপ্রিল একদিনে নমুনা পরীক্ষার মোট সংখ্যা ফের দুই হাজার ছাড়িয়েছে। এর আগে ১৮ এপ্রিল একদিনে মোট ১ হাজার ১৩৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়। ১৯ এপ্রিল এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৫৬টিতে। ২১ এপ্রিল পরীক্ষাকৃত নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৬৫টিতে।
বিশেষ বিমান চলাচলের অনুমতির পর বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, ১৪ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত চট্টগ্রামে দৈনিক পরীক্ষাকৃত নমুনার মধ্যে একটি বড় অংশই ছিল বিদেশগামীদের। তবে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণায় বিদেশগামীদের নমুনা কমে যায়। এর ফলে মোট নমুনার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় কমে আসে। তবে বিশেষ বিমান চলাচল শুরুর পর থেকে বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে দৈনিক মোট নমুনার সংখ্যাও বাড়ছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়- ১৭ এপ্রিল থেকে বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। ওইদিন (১৭ এপ্রিল) ১০৮ জন বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষা হয় চট্টগ্রামে। পরদিন (১৮ এপ্রিল) এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬১ জনে। ১৯ এপ্রিল পরীক্ষা হয় ৪৮৫ জন বিদেশগামীর নমুনা। আর ২০ এপ্রিল এ সংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়েছে। এদিন (২০ এপ্রিল) ৫৬৬ জন বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। দিন দিন বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়তে থাকায় দৈনিক মোট নমুনার সংখ্যাও ফের বাড়ছে চট্টগ্রামে।