বাস্তবায়িত হোক নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি

শুভ হোক নতুন সরকারের যাত্রা

| শুক্রবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাই আমরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেখে সবার মধ্যে জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, মন্ত্রিসভায়ও বড় পরিবর্তন আসছে কি না। অনেক নতুন মুখ আসার আভাস পাওয়া গিয়েছিল আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে ৩৬ জনকে নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে, তাতে অনেক বাদ পড়া ও নতুনদের অন্তর্ভুক্ত করার চমক থাকল। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বৃহস্পতিবার টানা চতুর্থবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে আরও ৩৬ জন মন্ত্রীপ্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়ালেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। নতুন মন্ত্রিসভায় নতুন ২২ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাদ পড়েছেন আগের মন্ত্রিসভার ৩০ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। নতুন ২২ জনের মধ্যে একেবারেই নতুন হলেন ১৪ জন। বাকিরা বর্তমান ও আগের কোনো না কোনো মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।

বিশ্বনেতৃবৃন্দ জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দলের নিরঙ্কুশ জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দলের নিরঙ্কুশ জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে এবং তাঁর সরকারের সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এক বার্তায় ডব্লিউইএফএর নির্বাহী চেয়ারম্যান অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াব বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ে আপনার দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অনুগ্রহ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষ থেকে আমার অভিনন্দন গ্রহণ করুন। আমি নতুন মেয়াদে আপনার এবং আপনার সহকর্মীদের সাফল্য কামনা করি।’ তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার পূর্ণ লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম মুখিয়ে আছে। ‘আস্থার পুনঃনির্মান’ প্রতিপাদ্যের অধীনে ৫৪তম বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে শোয়াব বলেন, ‘আমি আপনাকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ৫৪তম বার্ষিক সভায় আমন্ত্রণ জানানোর সুযোগ নিতে চাই, যা সুইজারল্যান্ডের দাভোসক্লিস্টারে ১৫ থেকে ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই এই প্রচেষ্টায় আপনাকে জড়িত করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি এবং আশা করি আপনাকে দাভোসে স্বাগত জানাতে পারবো।’ যথারীতি, ১শ’টিরও বেশি সরকার প্রধান, সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১ হাজারটি বৈশ্বিক সংস্থা, প্রাসঙ্গিক নাগরিক সমাজ এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী মিডিয়া সর্বোচ্চ মাত্রায় এই বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিবে।

শেখ হাসিনার নতুন নেতৃত্বের ভূমিকায় তাঁর সাফল্য কামনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে পুরোপুরি উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। শোয়াব বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে এগিয়ে নেওয়া সাহসী সংস্কারগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান বাড়াতে সাহায্য করেছে।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে এবার নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতৃত্বাধীন সরকারকে। একদিকে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন, অন্যদিকে বিদেশিদের চাপ সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতেই নতুন সরকারকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ সামলাতে হবে। সে কারণে এবারের মন্ত্রিসভাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। এ ছাড়া সুশাসন, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলোও আছে।’

আসলে নতুন সরকার নবউদ্যম নিয়ে কাজ করবেএ প্রত্যাশা নিয়ে আছেন অনেকেই। ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ নতুন সরকার গঠন করছে। নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ হবে অগ্নিসন্ত্রাস সমূলে উৎপাটন করা ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া। অন্যদিকে, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন সরকারের প্রধান কাজ হবে নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তিনি বলেন, ২০২৪ সালে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। দলমত নির্বিশেষে দেশের অব্যাহত উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের ঠান্ডা মাথায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানান ওবায়দুল কাদের।

সকলের প্রত্যাশা নতুন এই সরকার সুশাসনসহ অন্য বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে