নগরীর বাসা-বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসার মাধ্যমে ৩শ’ টন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ৩০টন ফিকেল স্ল্যাজ (টয়লেটের বর্জ্য) সংগ্রহের জন্য বিশ্বব্যাংক ওয়াটার এন্ড স্যানিটেশন নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের ফেইজ-২এর’ অধীনে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিশ্বব্যাংক।
এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম ওয়াসার সাথে সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএকেও সম্পৃক্ত করতে চায় বিশ্বব্যাংক।
ইতোমধ্যে নগরীর বাসা-বাড়ির সেফটি ট্যাংকের ময়লা কিভাবে অপসারণ করা যায় সেই ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক সমীক্ষা চালিয়েছে। ফলাফল যেটা পেয়েছে সেটা বাস্তবায়নে তারা কিছু সাজেশন দিয়েছে। তারা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ওয়াসার পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএকেও সম্পৃক্ত করতে বলেছেন বলে জানিয়েছেন ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প প্রস্তাবনা নিয়ে আমরা আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাথে বৈঠক করেছি। বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। এরপর আমরা সিডিএর সাথেও বসবো। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খুব শীঘ্রই আমাদের ত্রিপক্ষীয় একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি হবে। ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, নগরের পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে ওয়াসার অধীনে পয়নিষ্কাশন ও স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডকে ৬টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। বর্তমানে চলছে প্রথম জোনের কাজ। প্রকল্প বাস্তবায়নে নগরীকে ছয়টি জোন বা ক্যাশমেন্টে ভাগ করা এরিয়াগুলো হলো- ক্যাশমেন্ট-১ নগরের হালিশহর এরিয়া, ক্যাশমেন্ট-২ কালুরঘাট, ক্যাশমেন্ট-৩ ফতেয়াবাদ এরিয়া, ক্যাশমেন্ট-৪ পূর্ব বাকলিয়া, ক্যাশমেন্ট-৫ উত্তর কাট্টলী, ক্যাশমেন্ট-৬ পতেঙ্গা এরিয়া। এ সব ক্যাশমেন্টের মধ্যে বর্তমানে কাজ চলছে ক্যাশমেন্ট-১ বা হালিশহর এরিয়ার কাজ।
প্রায় ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পের ৫০ কোটি টাকা দিচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা এবং বাকি টাকা দিবে কোরিয়ান এঙ্মি ব্যাংক। মালয়েশিয়া ভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এরিনকো এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে।
ক্যাশমেন্ট-১ এ ১০ কোটি লিটার ধারণক্ষমতার একটি সলিড ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) এবং ৩০০ টন ধারণক্ষমতার ফিকেল স্ল্যাজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এফএসটিপি) নামে দুইটি শোধনাগার নির্মাণের কাজ চলছে। শোধনাগার নির্মাণে একটি কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান এবং পাইপলাইন বসানোর কাজ বা নেটওয়ার্কিং কাজ করছে দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান।
আরিফুল ইসলাম জনান, নগরের বর্জ্যসমূহ দুইটি ধাপে সংগ্রহ করা হবে। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের আওতায় রান্না ঘর, গোসলের পানি এবং টয়লেটের বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে। এক্ষেত্রে গ্রাহকের বাসায় স্যুয়ারেজের পাইপলাইন বসানো হবে। ওই পাইপলাইনের মাধ্যমে গৃহস্থলী বর্জ্যসমূহ সরাসরি ক্যাশমেন্ট এরিয়ার পরিশোধনাগারে চলে যাবে। সেখানে এ সব পানি পরিশোধিত হয়ে নদী ও সাগরে গিয়ে পড়বে। তবে কারিগরি যাচাই-বাছাইয়ে নগরের প্রায় ৩০ শতাংশ এরিয়া স্যুয়ারেজ পাইপলাইন স্থাপনের অনুপযোগী। এক্ষেত্রে ফিকেল স্ল্যাজ ম্যানেজমেন্টের আওতায় নগরীর বাসা বাড়ির ৩৩০টন টয়লেটের বর্জ্য ভ্যাকুয়াম ট্রাক ও গাড়িতে করে পরিশোধনাগারে নেওয়ার ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে বিশ্বব্যাংকের ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের ফেইজ-২এর’ অধীনে কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে।










