বাসন্তী সন্ধ্যায় পূর্ণিমার আলো

নাজনীন আমান | বুধবার , ৫ মার্চ, ২০২৫ at ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

বাতাসে বহিছে প্রেম/ নয়নে লাগিলো নেশা/ কারা যে ডাকিলো পিছে/ বসন্ত এসে গেছে’। চারপাশে বইছে বসন্তের আগমনী সুর। পূর্ণিমার আলোয় আলোকিত প্রকৃতি। ফুলে ফুলে পত্র পল্লবে সেজে উঠেছে ধরনী। এই সাজসজ্জাকে আরও দ্যুতিময় করতে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার।

সময়টা ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ। বসন্তময় ভালোবাসার দুইদিন পূর্বে। ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত জসীম হলের ঘড়িতে সন্ধ্যা ৭টা। হলটি কানায় কানায় পরিপূর্ণ দর্শকে। এবারের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান কর্ণেল মেসবাহুল ইসলাম খান এ এস ডব্লিউ সি, পিএসসি, স্টাফ সদর দপ্তর, ২৪ পদাতিক ডিভিশন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেগম মুনমুন সুলতানা। তাঁদের ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে স্বাগত জানান স্কুল ও কলেজের মাননীয় অধ্যক্ষ। পবিত্র কুরআন পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্কুল ও কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক ও সংস্কৃতির বিভিন্ন ধাপে প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীদের সফলতা ও অর্জন সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল রোমানা জামান পি এস সি। এরপর শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিভিন্ন পর্যায়ে সুনাম বয়ে আনার জন্য পুরস্কৃত করা হয় বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদেরকে ও স্কুল ও কলেজের সেরা দুই হাউজকে। তাদের সকলের প্রতি জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। এরপর পরিবেশিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

একুশ আমাদের অহংকার, একুশ আমাদের চেতনা। তাই একুশকে চেতনায় ধারণ করে একুশের গান দিয়েই শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপর পরিবেশিত হয় বাচ্চাদের ছড়া গান, শিক্ষামূলক নাটিকা ‘মোবাইল ব্যবহারের আধিপত্য’, ইংলিশ সং, ফিউশন ড্যান্স, ব্যান্ড সংগীত, ফ্যাশন শো, বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনা। সকল কিছুই দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছে। তাহসান, জেমসের গানের পাশাপাশি স্মরণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় আইয়ুব বাচ্চুকে যা দর্শকদের মন জুড়িয়ে দেয়। দর্শকরা ছাত্রছাত্রীদের সাথে সাথে গান গেয়ে ওঠে। তারা ফিরে যায় তাদের স্কুল জীবনে। এ এক পরম পাওনা তাদের জন্য। এবারের ফ্যাশন শোয়ের বিষয়বস্তু ছিল দারুণ চমৎকার। একেক যুগের একেক ধরনের পোশাক। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা অনেক পরিশ্রম ও অভিভাবকদের সহযোগিতার ফলে এ ধরনের পোশাক সংগ্রহ করে মূল অনুষ্ঠানের দিন উপস্থাপন করেছে। যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। সবশেষে উপস্থাপন করা হয় ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় বাদ্যযন্ত্র। যেখানে তবলা তানপুরা বেহালা বাঁশি ড্রামসহ আরো বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন শাস্ত্রীয় সংগীত। এই ধরনের আয়োজন আমাদের এক গেঁয়েমী জীবনকে কিছুটা হলেও আনন্দ ও প্রাণচাঞ্চল্যময় করে তোলে। অবশেষে প্রধান অতিথির মূল্যবান ও প্রেরণামূলক বক্তব্যের মাধ্যমে ইতি টানা হয় এক বাসন্তী সন্ধ্যার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিরাপত্তা পাওয়া নাগরিকের অধিকার
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে