ডাক গাড়িতে করে বালু পরিবহনের অভিযোগে চালক আশ্রাফুল ইসলামকে কুমিল্লায় বদলি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার পোস্ট মাস্টার জেনারেল পূর্বাঞ্চলের নির্দেশে সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল তাপস চাকমা এই বদলি আদেশে স্বাক্ষর করেন।
চট্টগ্রাম ডাক বিভাগের একটি কাভার্ড ভ্যানে করে বালু পরিবহন করা হচ্ছিল গত শুক্রবার। সরকারি বন্ধের দিন গাড়ি গ্যারেজে থাকার কথা থাকলেও ডাকপরিবহনের বিশেষায়িত এই গাড়িতে করে বালু পরিবহনের ঘটনাটি কয়েকজন ডাক কর্মীর নজরে আসে। এই ঘটনায় ডাক বিভাগের সাধারণ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বিষ্মিত হন। তারা বিষয়টি ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে টনক নড়ে। গতকাল এই ব্যাপারে দৈনিক আজাদীতে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা পাওয়ায় ডাক কর্তৃপক্ষ ড্রাইভার আশ্রাফকে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় বদলি তথা স্ট্যান্ড রিলিজের আদেশ দেয়। গতকাল ড্রাইভার আশ্রাফুল ইসলামকে যে বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে তাতে (স্মারক ও নথি নম্বর কর্ম–এ/এ ৫৯/পিও লুজ–১ তারিখ: ২৩/১০/২৩) বলা হয়, ‘জন ও বিভাগীয় স্বার্থে পোস্ট মাস্টার জেনারেল পূর্বাঞ্চলের অনুমোদনক্রমে অবিলম্বে কার্যকরের জন্য পার্শ্বে বর্ণিত পদ ও কর্মস্থলে বদলি আদেশ জারি করা হল।’ আশ্রাফুল ইসলামকে কুমিল্লা বিভাগে শূন্যপদে বদলি করে চট্টগ্রামে তার স্থলে নেজামউদ্দিন নামে দৈনিকভিত্তিক এক কর্মচারীকে পদায়ন করা হয়েছে।
তবে সাধারণ কর্মচারীরা বলছেন, সরকারি গাড়িতে ভাড়ায় বালু পরিবহনের এ ঘটনা গুরুতর অপরাধ। অথচ তাকে শুধুমাত্র বদলির আদেশ দিয়ে ‘লঘুদণ্ড’ দিয়ে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ উঠেছে, যে গাড়িতে করে বালু পরিবহনের ঘটনা ধরা পড়েছে ওই গাড়িটির বিপরীতে বরাদ্দ তেলের বড় অংশ চুরি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম–কাপ্তাই রুটে ডাক পরিবহনে নিয়োজিত এই গাড়িটি সরকারি ছুটি ব্যতিত প্রতিদিন ডাক পরিবহন করার কথা থাকলেও মাসে গড়ে ৫–৬ দিন ডাক নিয়ে গেছে। অথচ প্রতিমাসেই এই গাড়ির বিপরীতে বরাদ্দকৃত তেল উত্তোলন করা হয়েছে।
অনুসন্ধান ও জিপিও’র গেটে রক্ষিত এন্ট্রি খাতায় দুই মাসের তথ্য ঘেঁটে দেখা গছে, চট্টগ্রাম–কাপ্তাই রুটে ডাক পরিবহনে নিয়োজিত ডাকবিভাগের নিজস্ব গাড়িটি আগস্টে চারদিন জিপিও কম্পাউন্ড থেকে বের হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে বের হয়েছে ৫দিন। অর্থাৎ গাড়িটি দুই মাসে মাত্র ৯ দিন বের হয়েছে। কিন্তু ৯ দিন বের হলেও সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত প্রতিদিনই এই গাড়িটির বিপরীতে ১৮ লিটার করে জ্বালানি তেল ক্রয় বা উত্তোলনের হিসাব দেখানো হয়েছে। তেল চুরির এই টাকা একটি চক্র ভাগবাটোয়ারা করে বলেও সূত্র জানিয়েছে।