নগরীর বালুছড়া এলাকায় হযরত করম আলী শাহ নামে একটি জামে মসজিদের দানবাক্স ভেঙে টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হলে অভিযুক্তদের হামলায় দু’জন আহত হন।
এ ঘটনা ঘটেছে নগরীর বায়েজিদ থানাধীন বালুছড়া কাশেম ভবন এলাকায়।
জানা গেছে, গত ১২ মে স্থানীয় হযরত করম আলী শাহ জামে মসজিদে চুরি এবং মসজিদের দানবাক্স ভেঙে টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে যায় একটি পক্ষ।
এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সদস্য ছালেহ জহুর ১৩ মে বায়েজিদ থানায় অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে পুলিশ।
এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অভিযুক্তরা। হামলা চালানো হয় থানায় অভিযোগ করা বাদী ছালেহ জহুর ও তার ছেলে সাজ্জাদের ওপর। কুপিয়ে রক্তাক্ত এবং ডান হাত ভেঙে ফেলে একটি দোকানে আটকে রাখা হয় সাজ্জাদকে।
পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও মসজিদের জমিদাতা মো. ইব্রাহিম তাকে উদ্ধার করতে গেলে অভিযুক্তদের হামলার শিকার হন।
আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ ঘটনায় মসজিদে লুটপাটের দায়ে অভিযুক্ত মো. নুরুল আমিন ও মারধরের শিকার মো. ইব্রাহিম গত ১৬ মে বায়েজিদ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় হযরত করম আলী শাহ জামে মসজিদ কমিটির আহ্বায়ক ও মামলার বাদী ইব্রাহিমের ছোট ভাই কামাল উদ্দিন সায়েম বলেন, “মসজিদে লুটপাটের দায়ে অভিযুক্ত মো. নুরুল আমিন এলাকায় একজন ধর্মব্যবসায়ী। এলাকায় মসজিদ কমিটি ও মাজার কমিটির বিভিন্ন পদে থেকে নামে-বেনামে চাঁদা তুলে নিজেই ভোগ করতেন। তার এসব অপকর্মের খবর জানাজানি হলে স্থানীয় মসজিদ কমিটি থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন তিনি। এর আগে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে থানায় ৪টি মামলা, ৪টি জিডি ও ২টি অভিযোগ রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “মসজিদের জিনিস চুরি ও দানবাক্স লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মসজিদ কমিটির সদস্য ছালেহ জহুর থানায় অভিযোগ দেওয়ায় তাকে এবং তার ছেলেকে মারধর করেছে। পরে আমার বড় ভাই মো. ইব্রাহিম বিষয়টি মীমাংসা করতে গেলে তাকেও মারধর করে। আমার ভাই বাদী হয়ে মো. নুরুল আমিনকে প্রধান আসামি এবং মো. সেলিম, মো. সোহেল, নুরুল হুদা মামুন, মোহাম্মদ শাহীন, ফরহাদ, সালাউদ্দিন রুবেল, রাশেদ, আজাদকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।”
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত নুরুল আমিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মো. ইব্রাহিমের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া বলেন, “মামলার বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে যেটি জানতে পেরেছি মসজিদকেন্দ্রিক ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষ মামলা করেছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত সত্য জানা যাবে।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাহেদ ইকবাল বাবু বলেন, “মসজিদ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। গত কয়েকদিন আগেও দুই পক্ষ ঝামেলায় জড়িয়েছে এবং পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে। দুই পক্ষই আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি।”